দেখেছি এমনি কাণ্ড, কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ বলা দুষ্কর।
না বললেই নয়, সেসময় অভিযোগকারীরা সমস্বরে চিৎকার করতেই ছিল তৎপর।
গাছের ডালে বসা কাকাতুয়াকে বলতে শুনেছি, কতকগুলো দল নাকি পথে নেমেছে করতে লড়াই সংগ্রাম। রাতদিন তারা এমনি খাটছে যে তাদের নেই মোটেও বিশ্রাম।
তারা সবাই নাকি জনদরদী, তাদের সবার উদ্দেশ্যও একই।
নানান ধর্মীয় মতাদর্শে বিশ্বাসী ঈশ্বরের উপাসকদের মতো অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনে রত।
যে দলের যাই ভাবনা থাকুক তবে পথ ভিন্ন, বেশ ছড়ানো ছিটানো হাতের আঙ্গুলগুলোর মতো।
সোজাসাপটা কথা দলগুলোর মধ্যেও চলছে যেন তীব্র দৌড় প্রতিযোগিতা।
প্রত্যেক দল সারাবছর নজরে রেখেছে সাফল্যের দৌড়ে অন্যান্য দলগুলোর কে কতটা তাদের চেয়ে এগিয়ে কিংবা পিছিয়ে।
কেউ কি আর থাকতে চায় পিছিয়ে? তাই সেই নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রায়শ বাঁধছে ঠাণ্ডা লড়াই। এ থেকে যেন নিস্তার নাই।
ধন্য রাজার পূর্ণ দেশে কত কী ঘটে! পঙ্গপালের মতো বহিঃশত্রুর আক্রমণ দেখা দিলে, যখন শুরু হয় তাদের বাঁচার লড়াই, তখনি সেই দলগুলো নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে হাতের আঙ্গুলগুলোর মতো জোট বাঁধতে পিছপা হয়না কখনো।
পরিস্থিতি দাঁড়ায় একেবারে ভিন্ন। নির্বাচনের ঘণ্টা ঢং ঢং করে বাজলেই সাপের লেজে কারো পা পড়ার মতো তাদের অবস্থা। দলগুলোর গোপন আস্তিন থেকে বেরিয়ে আসে যেন অদ্ভুত চরিত্রের কতগুলো বন্য, যা দেখলে যে কারোর মুর্ছা যাওয়ার মতো।
তখন বোঝা যায় দলগুলো স্বার্থের সংঘাতে কত নিমজ্জিত! বলার অপেক্ষা রাখে না, জনস্বার্থ তখন হেলায় ভূলুণ্ঠিত।
সেই শুরু, কোন দল কত আসনে লড়বে সেই নিয়ে দরাদরি। কোন দল কোথায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে সেই আসন নিয়েও কাড়াকাড়ি।
জনসমক্ষে দলগুলো সুদীর্ঘকাল গলায় গলায় ভাব জমালেও কী, ভোট ঘনিয়ে আসলে বোঝা যায় তারা মুষ্টিবদ্ধ হাতের মতো হয়ে উঠতে পারেনি এখনো।
প্রমাদ গুনি, কী জানি, তারা এভাবে পার হতে পারবে কি ভোট বৈতরণী?
বাতাসে কান পাতলে শুনি বলছে কাকাতুয়া, রাজনৈতিক দলগুলো জনস্বার্থের কথা ভাবুক পরে, হাতে সময় থাকতে আগেভাগে নিজেরাই মুষ্টিবদ্ধ হাতের মতো হয়ে উঠতে চেষ্টা করুক।