খরস্রোতা নদী সমূহ যেমন মোহনার
ধারে কাছে বাঁকে এসে ঠেকে পাঁকে,
মনে হয় মানুষের মনুষ্যত্ববোধ এখন
সে পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। কী শিক্ষা
পেলাম বীরভূম জেলার বগটুই গ্রামে
নির্মম গণহত্যা থেকে?
এ যেন আবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।
মানুষের মনুষ্যত্ববোধ কতখানি সজাগ
আছে-সে প্রশ্ন উঠে এলো নাকি?
ভাবতে ও অবাক লাগে কী করে এতো
মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করতে পারে?
এ কোন সভ্যতা?
গণহত্যা!পাশবিকতা আর বাড়তে পারে
কতটা? হায়রে,এ  কী দুঃসময়। মরার
আগে এতোগুলো নিরীহ শিশু সহ নারী
পুরুষের গগন-ভেদী বাঁচানোর আকুতি
সেও বিঁধেনি সেখানে প্রত্যক্ষদর্শী দের
বিবেকে!
‘অজস্র মানুষের চোখের সামনে এতো
নিরীহ মানুষ মৃত্যুর কাছে করলো যেন
গণ-আত্মসমর্পণ’। এ আবারো ও ঠাই
পেল ইতিহাসে। অবশ্য এই হত্যাকাণ্ড
ঘটালো যারা তাদের কী যায় আসে?
ওরা মানবতাকে এভাবে আরো মারবে
কি পিষে?
মানব দেহের মাংস পোড়া গন্ধ এখন
পৌঁছে গেল কি মানুষের সহ্য-সীমায়?
দাউ-দাউ করে দেহগুলো জ্বলে পরিণত
হলো কালো ঝলসানো মাংস-পিণ্ডে।
এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে,ভাবতে অবাক
লাগে অজস্র মানুষ সমগ্র ঘটনা দেখেও
নীরব দর্শক ছিল।
লঙ্কা দাহনের মতো বাড়িগুলো জ্বালিয়ে
পুড়িয়ে ছাইভস্ম করে,জানি না,এ-তাণ্ডব
সৃষ্টিকারীরা কতটা স্বস্তি পেল?
বগটুই-এ ঘটলো যা,ব্যক্তি-স্বার্থের ঊর্ধ্বে
উঠে নিরীহ জনগণ গণ-প্রতিরোধও গড়ে
তুলতে পারলো কি? মানবতাকে সমাহিত
করতে আর বাকি থাকলো কি?
যা দিনকাল এখন ব্যক্তি-স্বার্থে অসংখ্য
মানুষের সমাজের প্রতি অতি উদাসীন
থাকার কারণে চক্রবৃদ্ধি হারে প্রতিদিন
বাড়ছে যে ঋণ, সন্দেহ জাগে,জনগণ
সেও টের পায় কি কোনদিন?