সে ঘটনা ভুলিনি আজও,
মনে পড়ে শুরু হলো যখন ভাগীরথী নদীর ভাঙ্গন
নদীতীরের বসত বাড়িগুলো অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে
নদী গর্ভে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে
কাঁপলো থরথর করে
বাসিন্দারা বাঁচার তাগিদে করেছিল ছোটাছুটি
একরতি শিশুরাও জানালো বাঁচানোর আকৃতি
সে সময় তুমি করলে কী?
বাড়াওনি সাহায্যের হাত
বরং প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে থেকে
অনুচরদের সাহায্যে কেড়ে নিলে
হতভাগাদের যেটুকু ছিল অর্থকড়ি,
আর মুখোশ পরেও বেতাল, মহাকাল,
নন্দী, ভৃঙ্গী, যোগিনী, ভৈরবী কে সাথে নিয়ে
তাদের শোনাতে গেলে গম্ভীরা গান।
একবারও অনুভব করতে চাওনি
কী ঘটতে পারে বাসিন্দাদের মনের ভেতরে?
শিয়রে উঠতে হয়, বৈকি, শুনলেও
নদী ভাঙ্গনের সেই ধপাস ধপাস শব্দ।
সেগুলো কি ধাক্কা না- দিয়ে পারে
হতভাগাদের বুকের পাঁজরে?
তখন তাদের শিরে সংক্রান্তি,
পায়নি ভেবে করবে কী?
তারা শুনতে চায়নি তোমার গম্ভীরা গান।
বলেছিল, এ গান এখন শুনিও না
তবু তুমি সে কথায় সায় দিলে না
বরং তাদের নিকানো উঠানে সদলবলে
নেচে গেয়ে তাদের সে গান শোনালে।
দেখলে দাঁড়িয়ে সেই বসত বাড়িগুলো
একে একে কিভাবে নদী গর্ভে চলে গেল।
কতিপয় বাসিন্দা সাঁতরে তীরে পৌঁছলো বটে
অনেকেই জলে হাবুডুবু খেয়েও বাঁচলো না,
জলে ডুবেই মারা গেল।
সে দৃশ্য তীরের ফলার মতো বিঁধেনি তোমার বিবেকে।
চারদিকে কানাকানি করছে অনেকে
বরং সেই গৃহহারাদের অর্থকড়ি কেড়ে নিয়ে
গড়লে নিজের অট্টালিকা, সঞ্চয়ও কম করোনি।
একবারও ভাবোনি এই বেনজির সঞ্চয়ের কারণে
পড়তে পারো ই ডি ও সি বি আই এর নজরে।
ভাবোনি, যে জলস্রোত ভাঙলো তাদের বাড়িঘর
সেটি আদি গঙ্গায়ও পৌঁছতে পারে।
দেখছো, এখন হচ্ছে কী?
ভাগীরথীর সেই জলস্রোত পৌঁছলো আদি গঙ্গায়,
তোমার অট্টালিকা ও এখন ভাঙ্গনের মুখোমুখি।
দেখি, ঘটছে আরো কত কী!
ই ডি ও সি বি আই বেরিয়ে পড়েছে
তোমার বেনজির সম্পত্তির উৎস সন্ধানে।
এখন মনে জাগছে কি উৎকণ্ঠা,-একথা শুনে?
তাদের পাচ্ছো ভয়? -কী জানি কখন কী হয়!
কানে ভেসে আসছে কি বন্দীশালার শিকলের গান?