সে যেন এক অজ্ঞাত কূলসম্ভবা।
গভীর রাত। আমার মনের নাট মন্দিরে
জ্বলছিল একটি প্রদীপ। মন্দিরের দুয়ার
আবজানো যেন আরাধ্য দেবী সহজেই
মন্দিরে ঢুকতে পারে।
অচিরে নাচতে নাচতে ঘোমটা পরা এই
রমণী ঢুকলো নাট মন্দিরে।
আবেগ-মথিত হয়ে নিদারুণ ছন্দে নাচতে
শুরু করলো ধ্রুপদী নৃত্য রুক্মিনী দেবীর
মতো।
বলতে দ্বিধা কী, আমাকে করলো মোহিত।
তার পদ-সঞ্চালনে বাজলো নূপুরের ধ্বনি,
রিনিঝিনি।
কৌতূহল বশে তাকে জিজ্ঞেস করেছি, ‘কে
তুমি? কেন এ গভীর রাতে এলে এখানে?
বললো ইশারায়, ‘এখনো চিনতে পারোনি?
কোথায় তোমার চিন্তামণি? এখনি তাকে
ডেকে এনে পরতে পরতে খোলো চিন্তার
ভাঁজ।
উদ্ঘাটন করতে চেষ্টা করো, 'আমি কে?'
বলি, আজ এসেছি তোমার কাছেই ধরা
দিতে’।
ঘোমটায় লুকনো মুখ, তাকে চেনা দায়।
ভেবেছি, ধরা যদি দেবে এ বাসনা তার
মনে, তবে কেন সে ঘোমটার আড়ালেই
মুখ লুকিয়ে রেখেছে?
বুঝতে চেয়েছি সে কে, হতে পারে তার
নৃত্যের ভঙ্গিমা, ছন্দ ও লয় দেখে?
চেতনা, ঝড়ের সম্ভাবনা দেখে প্রবহমান
নদী-বাঁকে তার নৌকাখানি যখনি নোঙর
করে এসে মনোমন্দিরের দরজা খুলেছে,
দেখেছি হঠাৎ ধেয়ে আসা উত্তাল ঝড়ে
সরে গেল রমণীর মুখের ঘোমটা।
নজরে এলো সে অন্য কেউ নয়, ‘কবিতা’।