রথের সারথি করছো কী?
দেখি, লাগাম ছাড়া তোমার ঘোড়াগুলি, দিশেহারা।
ছুটছে রথ সাহারা মরুভূমির দিকে,
এ দৃশ্য দেখেও করবে কী?
জড়ালে দুর্নীতির বেড়াজালে
জীবনের মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছ নাকি?
সুস্থ জীবনের চেনা ছন্দ, সেও!
দেখি, আনন্দ খুঁজে পেতে করছো আরও কত কী!
লকলকে জিভ দিয়ে ক্রমাগত ঝরছে লালা
কাজে কর্মে দেখালে নানান ছলাকলা
তোমার চোখগুলো এখনো করছে ছলছল
অনর্গল লোভ ও ব্যক্তিগত ভোগ বাসনায়,
লোভাতুর দৃষ্টি, কী ভয়ানক অনাসৃষ্টি!
বেশ আছো, খেয়ে দেয়ে সমাজ-বৃক্ষের পাকা ফল
আনন্দ-উল্লাসে বাজাচ্ছ মাদল।
তোমার মুখের ভাবখানা,
সমাজের বঞ্চিত মানুষগুলো যেন অচেনা।
এতকাল যাদের হাড়-মাংস চিবিয়ে খেলে
সেই মানুষদের কাছেও যেন নেই কোনও দেনা।
দেখছি চারদিকে খরা, বাতাসে বইছে লূ,
অসহায় সমাজ পুড়ছে খাঁ-খাঁ করা রোদ্দুরে
তুমি নিরাপদে বেশ কাটাচ্ছ, সমাজ-বৃক্ষচ্ছায়ে।
বঞ্চিতরা বঞ্চনার শিকার, রোদে পোড়ে
তাদের লালা ঝরবে কী? মরণোন্মুখ, বিপদ শিয়রে।
তবু তুমি বেশ নিঃস্পৃহ,
যেন তারা ছটফট করে মরলেও কী আসে যায়?
সমাজের প্রতি তোমার নেই কোনও দায়,
সমাজে দেখা দিলেও সামান্য পাণিয় জলের হাহাকার
বাঁচার তাগিদে একটু জলের জন্য তারা করলে চিৎকার
তাদের গলায় বিষ ঢালো, কম কী?
ধ্রুবতারা সাক্ষী!
নিষাদের মতো কর্মকাণ্ডও কম করছো কি?
বানে বিদ্ধ করে তাদের করছো ক্ষতবিক্ষত
অনাহূত হলেও নিজের স্বার্থে বাঁধাচ্ছ যুদ্ধ,
বধ্যভূমি ভাসছে নিরীহদের রক্ত স্রোতে
অনাবশ্যক আরও কত কী ঘটে!
প্রতিবাদীদের কারাগারে অবরুদ্ধ করতে
মিথ্যার জালে জড়াতে চাও ছলেবলে।
অসহায় বঞ্চিত মানুষদের জীবন?
এখন কলে আবদ্ধ ইঁদুরদের মতো,
নিরুপায়, জলের পরিবর্তে বিষ দিলেও
তাদের করতে হচ্ছে গলাধঃকরণ।
এখন, তাদের নীলকণ্ঠের মতো অবস্থা,
ছটফট না-করে করবে কী?
বিষের জ্বালায় মরতে আর খুব কি বাকি?