এই তো সেদিন মাগুরমাছ
ধরতে গিয়ে হাতে বিঁধেছে
কাঁটা।উঁহু-আ- করে করেছি
চিৎকার।বুঝেছি অত্যাচার
কাকে বলে?
তারপর?কী আর বলবো!
বিষম যন্ত্রণা।অগত্যা,হতেই
হলো সার্জেনদের শরণাপন্ন।
জঘন্য ক্ষত।বুঝতেই পাচ্ছি,
আরোগ্য হবো না দ্রুত।
এই পরিস্থিতিতে রাতে,ঘুম
কি কারোও আসতে পারে?
ভয়ানক জ্বর এলো শরীরে।
সারারাত জেগেছি প্রহরীর
মতো।
সাতসকাল থেকে পাঁকাল
মাছের কথাই মনে পড়ে।
একবার বিঁধলে এই কাঁটা,
কেহ কি আর সে কথাটি
ভুলতে পারে?
ভাবতে বেশ অবাক লাগে।
পাঁকে থাকে,শিকার সন্ধানে
রোজ সেখান থেকে সাপের
মতো বেরিয়ে এসেই পাঁক
নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে অথচ,
দেখো,পাঁক লাগে না ওদের
শরীরে।কাজ শেষে আবারও
ফিরে যায় ওদের নিজেদের
আস্তাকুড়ে।
দেখো,তাদের তন্নতন্ন করে
খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।তস্করের
মতো থাকছে ধরা ছোঁয়ার
একেবারে বাইরে।  
ঘোর দুর্যোগ শিয়রে।বলছি,
দিনকাল মোটেই ভালো নয়।
চিনতে ভুল হলে পাঁকাল দের
পোয়া বারো।সুযোগ বুঝে ই
বাকীদের উপর অত্যাচারও
করে।
ভাবছি,এই উৎপাত কে সহ্য
করা ছাড়া আর কি কোনও
গত্যন্তর নাই!
প্রতিবাদ?বলি,যাবে কোথায়?
পাঁক ঘাঁটাঘাঁটি করার আছে
কি অভ্যাস?
আসছে ফাগুন-চৈত্র।বাংলায়
খালবিল শুষ্ক প্রায়।এখন ওরা
দিশেহারা।তবে এখনও বন্ধ
করেনি ওরা নড়াচড়া।
এবার ভাবনা চিন্তা করতেই
পারো।হয়তো এটা ওদেরকে
ধরার যথার্থ সময়।নয়তো,
কেন কাদাখোঁচা পাখি উড়ে
এসেছে এখনি।
দেখো,পাখিটি কে।আবেগের
ঘোড়ার থেকে নেমে পড়েই
খালে ও বিলে শুরু করেছে
পাঁক ঘাঁটাঘাঁটি।মাটি কামড়ে
পড়ে থেকেই সে একে একে
বড়সড় অনেক পাঁকাল মাছ
তুলে আনছে।সেসব দেখলে
চক্ষু চড়কগাছ।
গাজন আসন্ন।মেলার প্রস্তুতি
হয়েছে শুরু।বাঙালিরা মেলা
আর খেলা ছাড়া নিঃশ্বাস ও
ফেলতে পারে না নির্দ্বিধায়।
নিশ্চয় দ্বিমত হবে না এই
কথায়।
গাজনের প্রস্তুতি।ওই শোনো,
কে যেন গঙ্গার তীরে বসেই
ডুগডুগি বাজায়!তারই শব্দ
শোনা যায়।একতারা হাতে
বাউলও গান গায়।
বলি,আর ঘুমিও না।এবার
ভাবো,পাঁকাল মাছদের নিয়ে
করবে কী?বলা বাহুল্য,ইচ্ছা
করলে ওদের ধরে ভাগারেও
ঠাই দিতে পারো।