তাদের দশা,দেখছি রাজা কংসের মতো।
ঔদ্বত্তের সীমারেখা ছাড়াচ্ছে নিয়ত।
জানো তো,লক্ষণ-রেখা পেরলে,সকলের
জানকীর মতো ভয়াবহ পরিণতি না-হলেও
শুরুতেই বুকে একটু-আধটু দুরুদুরু হতে
পারে,একটু জোরে বায়ু বইলে ঠিক যেমন
গাছের ডালপালা নড়ে।
তারপর,কারো কারো সেটি সহে ও যায়
অনায়াসে।তারা হেসে খেলে দ্বিধাহীন ভাবে
মুক্ত বিহঙ্গের মতো আকাশে ওড়ার স্পর্ধা
দেখায়,আর সেই কাজটিও করে দেখায়
বারবার।যাকে বলে বাহাদুরি দেখানো,
আর কী!
জানো,এখন চলছে দুঃসময় বলতে হয়,
নয়তো তারা কিভাবে ভুলে যাচ্ছে রাজা
কংসের শেষ পরিণতি,এতো সহজে!
মনে পড়ে,রাজা কংস নিজের উদ্যোগে
ঘটা করে ভগ্নী দেবকী ও বসুদেবের
বিয়ে দেবার পরে নিজে যখনি রথের
সারথী হয়ে ভগ্নীকে তার শ্বশুর বাড়ীতে
পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হলেন,কী ঘটলো
সেসময়?তিনি নিজের কানে শুনলেন
দৈববাণী,ভগ্নী দেবকীর গর্ভের অষ্টম
সন্তান বধ করবে তাকে।
দুঃসময় ঘনিয়ে এলে এভাবে বিপদঘন্টা
বাজে,অনেকে অন্তরে অনুভব করে।কিন্তু,
বলতে পারো ক’জন সংযত হয়?কংসের
ক্ষেত্রেও হলো তাই!
সেকথা শুনে রেগে করলেন,একি!ভগ্নী
দেবকী ও তার স্বামীকে করতেই হবে
কারাবন্দী?
করলেন সেটাই।মুক্তি?সেটি হওয়ার নয়,
যতদিন-না ভগ্নীর গর্ভের অষ্টম সন্তানকে
করতে পাচ্ছেন নিধন!
জানি না,কেন যে মূর্খদের মতোই কংস
দেবকীর প্রথম থেকে পরপর ছয় সন্তান
হত্যা করলেন।বলি,ওদের নামে দৈববাণী
ছিল কি?
এ যেন উদোর পিণ্ডি ভুদোর ঘাড়ে।তবু
ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আরো দু'জনকে
হত্যা করতে তারপরও গুনতে লাগলেন
অপেক্ষার প্রহর।
পরের ঘটনা?
একদিন তার কাছে খবর এলো দেবকীর
কোলে নবজাতক।এই খবর শুনেই কংস
জল্লাদদের সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছলেন
তড়িঘড়ি।
এক শিশুকন্যা সে সময় দেবকীর কোলে।
তাকে ভগ্নীর সপ্তম সন্তান ভেবেই কংস
তাকে ভগ্নীর কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে
জল্লাদদের নির্দেশ দিলেন পাথরে নিক্ষেপ
করে শিশুটিকে হত্যা করে মারতে।
হায়রে,কত কী যে ঘটায় দুঃসময় এলে।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি মোটে।
এবার নিক্ষিপ্ত অবস্থায় সেই শিশুকন্যা
আকাশে উঠে গিয়ে চিৎকার করে বললো,
‘শোনো,রাজা কংস!তোমাকে বধিবে যে
গোকূূলে বাড়িছে সে’।
কথায় বলে,আগুন দেখলে পতঙ্গ সেখানে
উড়ে আসে মরবার তরে।কংসেরও সেই
দশা হলো।
একী দৈববাণী!সেটি শুনে ঠক ঠক করে
কাঁপলো তার সারা শরীর।গোকূলে বাধা
আছে নিয়তি?আর সেখানে তরতর করে
বাড়ছে যে কিনা বধ করবে তাঁকে!
জানি না,কংসের উত্তরসুরি যারা এখনও
দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বহাল তবিয়তে,তাদের
কানে পৌঁছায় কিনা সেরকম দৈববাণী!
তারপর?
রাজা কংস নির্দেশ দিলেন কতিপয় দৈত্য
দানবকে,‘সত্ত্বর সেখানে গিয়ে খুঁজে বের
করো কোন শিশু জন্মেছে সেখানে আর
তাকে হত্যা করে এসো এক্ষুণি’।
সেখানে শিশু শ্রীকৃষ্ণকে খুঁজে পাওয়া গেল
বটে,তার জন্ম বৃত্তান্ত সেও যেন ঘটনাবলী,
যাক গে,সেসব বলতে গেলে আবার জল
গড়াবে বহুদূর।কিন্তু ঘটনা হলো শিশুটিকে
মারতে গিয়ে ঘটলো আবার নানান কাণ্ড।
সে আর এক মহাকাব্য হওয়ার যোগাড়।
এটুকুই বলি,তাকে মারতে গিয়ে মরলো
বরং সেসব দৈত্য দানব।
তারপরও কী থামতে পারে রাজা কংস?
শুধু কংস কেন,এই ধরনীর থেকে বিলুপ্ত
হয়েছে কি তার সমস্ত উত্তরসুরি?
ঘটনা প্রবাহ আজও ঘটছে একই ক্রমে।
স্পর্ধার সীমারেখাকে অতিক্রম করলে যা
ঘটে,একেবারে মাঞ্জা দেওয়া দু’টি ঘুড়ির
লড়াই এর মতো কাণ্ড!
রাজা কংস ও শ্রীকৃষ্ণ উভয়ের যুদ্ধ হলো
অনিবার্য।
যুদ্ধের পরিণতি?
কংস বধ,যেন একেবারে ভো-কাট্টা ঘুড়ি।
জানি না,তার সব উত্তরসূরীদের পরিণতি
গড়াবে কি সেদিকে?