নেই বটে কোনও ভাষাজ্ঞান
তাই বলে ভেবো না নেই কোনও অনুভূতি!
যখন পশু হয়ে বনে কিবা মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়াই
কিবা নভচরী হয়ে আকাশে উড়ে বেড়াই
সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পাই
যখন অঝোরে বৃষ্টি ঝরে
নিজস্ব ভঙ্গিতে চিৎকার করি ভয়ে ডরে,
নিরাপদ আশ্রয়ও খুঁজে বেড়াই।
আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র আছে, প্রকৃতি দত্ত
জেনে রাখো, শত্রুপক্ষ দ্বারা ক্ষতবিক্ষত
হওয়ার আশঙ্কা না-থাকলে
কিবা কেউ আমার চৌহদ্দিতে এসে
মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে না-চাইলে
আত্মরক্ষায় কোনও ব্যাঘাত না-ঘটালে
সচরাচর হই না অতিশয় হিংসাশ্রয়ী
করি না ঠোটে ঠোটে ঠোকাঠুকি
শিঙ থাকলেও কাউকে মারি না গুতো
নখর হলেও অকারনে ছিড়ি না তার নাড়িভুড়ি।
মজে থাকি না ভোগ বিলাসিতায়
খাদ্য-খাদকতার নীতি মেনে চলি বটে
পেটে খিদে না-থাকলে
খেলা করি নয়তো উদাসী হয়ে ঘুরে বেড়াই
কিবা নিরাপদ আবাসে ঘুমিয়ে পড়ি।
যখন পাখি হয়ে আকাশে উড়ি
কর্মব্যস্ততা না থাকলে সন্ধ্যা-সকালে
স্বজনদের সাথে খেলা করি
নয়তো সকলে গলা মিলিয়ে করি কলকাকলি।
স্বজন বিয়োগ ঘটলে কারণে-অকারণে
দেখেছো কি আমার চোখ দিয়েও গড়ায় জল?
শুনেছো কি সেসময় কাক ও শঙ্খচিলদের
গগনভেদী চিৎকার, পশুদের আর্তনাদ?
আমি পশু-পাখি যা হই, আমি নির্দয় নই,
জেনো, অনুভূতিতে খাদ নেই মোটে।
ভাবো, অনুভূতিবর্জিত হলে
কে বা কারা এভাবে চারদিক তোলপাড় করে?
আমাকে চতুস্পদ দেখলে
যতই পশু বলে হাঁকডাক ও গালমন্দ দিয়ে
আনন্দস্রোতে গা-ভাসাও
দেখো, মাতৃস্নেহ থেকে কেউ বঞ্চিত হলে
অনাথদের প্রতি আমি কতটা সদয়!
জানি না, এভাবে গালমন্দ দেওয়ার পিছনে
পশুদের কী এমন বিশেষ পরিচয়!
বলি, ব্যতিক্রমী মানুষদের বাদ দিলে যা দাঁড়ায়
এটা সত্য, আমি তাদের মতো অতিশয় হিংসাশ্রয়ী,
পরশ্রীকাতর ও লোভ-লালসায় মত্ত মানুষ নই।