অপরাহ্ণ। মেঘে ঢেকেছে আকাশ
ভারী হয়েছে বাতাস।
বৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনা?
ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
নদীতীরে বসেছে হাট
কাজে ব্যস্ত ক’জন চোর পকেটমার
করছে না আর একটুও ইতস্তত
যে যার সামগ্রী নিয়ে এসে উঠেছে তরীতে
তড়িঘড়ি ওপারে পৌঁছে যেতে
এক বাউলও যাত্রী বটে সেই তরীতে  
নির্বিকারে গাইছে সে জীবনের গান
‘পরান রে, এখনো বুঝলি না
সামলে রাখতে পারবি কি তোর সামান...’
বলছে বাদবাকিরা, ‘মাঝি, আর করিস না দেরি
এখনি নদীতে ভাসিয়ে দে তোর তরী
করলে দেরি ঘটতে পারে অঘটন
মাঝ দরিয়ায় পৌঁছবো যখন’।
নির্বাক মাঝি হেসে
নদীতে তরী ভাসিয়ে মাঝ দরিয়ায় এসেছে যখনি
ঠিক তখনি হঠাৎ একেবারে সন্ত্রাসী কায়দায়
শো শো শব্দ করে ধেয়ে এসেছে ঝড়।
ঝোড়ো হাওয়া নদীতে তুলেছে বড় বড় ঢেউ
কেউ কেউ ভাবছে, 'কী জানি কী হয়?
পা দুটো কাঁপছে থরথর। ডুববে নাতো তরী?'
বাউল আবারও গান ধরেছে,
‘করলে চুরি, সইবে কি সেই যাতনা?
ও মন, তুই ভেবে দেখ না, করলে চুরি....’।
ভাবছে যাত্রীরা, 'সাঁতরে পার হবো এই নদী?
সেই সামর্থ্য আছে কি?
তাছাড়া কুমীরেরও ভয়, কামড়ে খাবে নাকি?'
তারা মুখে করছে না রা-শব্দ
ভয়ে সন্ত্রস্ত, যেন একেবারে জব্দ।
মুখ বুজে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে
তরী আগলে ধরে কোলে মুখ লুকতেই ব্যস্ত।