দেখেছি জীবন নাটকের এক দৃশ্য
ছেঁড়া মাদুরে মাটিতে শুয়ে এক বৃদ্ধ
পরনে মলিন এক চিলতে ছিন্ন বসন
গা উন্মুক্ত, মাংসপেশীর বাহুল্য দূরস্ত
সহজেই গোনা যায় তার পাঁজরের হাড়।
দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে গিয়ে
তার গড়া হয়নি আর সংসার।
বৃদ্ধ বয়সেও তার আক্ষেপ
এ কোন অর্জিত স্বাধীনতা?
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কোথায়?
সেকথার উত্তর দেবে কে? যেন কারো দায় নাই।
বৃদ্ধের হৃৎপিণ্ডের সঞ্চালন লুকনোর উপায় নাই
খাঁচা বন্দি পাখি ছট পট করছে বুকের পিঞ্জরে।
হায়রে, কত কী ঘটে এ বিশ্ব সংসারে।
শিয়রে সংকট,
তবু অন্তিম শয্যায় শুয়ে জীবনের স্বপ্নগুলো
আবারও সে দেখতে চেষ্টা করলো বিহ্বল দৃষ্টিতে!
হাতড়ে তন্নতন্ন করেও খুঁজলো চারদিকে
তার কাঙ্ক্ষিত ‘স্বাধীনতা’কে।
বিন্দুমাত্র ও স্পর্শ করতে পারেনি তাকে।
বৃদ্ধ বলতে চেয়েছিল তাকে অস্ফুট কণ্ঠস্বরে
‘গলা শুকিয়ে এলো জলের অভাবে
শোনো, না-ই বা ধরা দিলে,
একটু জল কি দেবে?- জল’।
কোনো স্থান থেকে কোনও সাড়া পেলো না
ঠোঁটে এক ফোটা জলের ছোঁয়াও লাগলো না।
অচিরে বাতাসে বইলো ধূলিঝড়
এক বটবৃক্ষের শুষ্ক ডালগুলো করলো মর মর
বৃদ্ধের শেষ যাত্রার সময় হলো
কালবিলম্ব করার আর উপায় কী?
রথ প্রস্তুত হয়ে সামনে এসে দাঁড়ালো
রথীর নির্দেশে তাকে রথে চড়তে হবে না কি?
বৃদ্ধ আক্ষেপের সুরে বললো,
দেখা পেলাম না ‘প্রকৃত স্বাধীনতার’
শেষ ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে গেল।
তার দু’চোখ দিয়ে ফোটা ফোটা করে জল গড়ালো।
সে রথে উঠলে রথী ঘোড়া ছোটালো,
ধূলি ধূসর পথ দিয়ে সামনে ছুটলো রথ।
নাটকের পরিসমাপ্তি, যবনিকাপাত ঘটলো।