দানব রাজা হিরণ্যকশিপু, তুমি ও তোমার ভগিনী হোলিকা উভয়ে ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত হয়ে করে দেখালে কী ভয়ানক কাণ্ড!
আজও চলছে এর পুনরাবৃত্তি। অশুভ শক্তি চারিদিক গ্রাস করতে উদ্যত? ক্রমেই বাড়ছে দাবানলের লেলিহান শিখার মতো।
এই অশুভ শক্তি সংযত হলে ভালো হতো কিন্তু সে আর হলো কৈ। আজও ধ্বংসাত্মক কর্মে লিপ্ত।
স্বপ্নে তুমি ও তোমার ভগিনী হোলিকার কর্মকাণ্ড দেখে ভেবেছি এই ধ্বংসযজ্ঞ চলতে পারে আর কত?
রাজা, তোমার অত্যাচারে দেবতারা অতিষ্ঠ। রাজপুত্র প্রহ্লাদ বিষ্ণুর উপাসক, তোমার শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিতে অস্বীকৃত।
পরিণতি? বড়ো দুঃখজনক ঘটনা। হোলিকা ভুলেছে ব্রহ্মার কাছ থেকে বর পাওয়ার শর্ত, প্রাপ্ত ‘শাল’ জাদুবিদ্যার জন্য ছিল না।
রাজা, প্রহ্লাদ তোমার শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিতে অস্বীকৃত হওয়ায়
হোলিকার সাথে ষড়যন্ত্রে করে প্রহ্লাদকে মেরে ফেলতে হলে
উদ্যত।
ফাগুন মাস, পূর্ণিমার সন্ধ্যা।
হোলিকা তোমার নির্দেশে সেই শাল নিজের গায়ে জড়িয়ে প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে বসলো যখন, তুমি সেখানে আগুন ধরিয়ে দিলে।
হয়তো হোলিকা বর প্রাপ্ত শালের কারণে ভেবেছিল সে নিরাপদ থাকবে আর প্রহ্লাদকে আগুনে পুড়িয়ে মরতে হবে।
কিন্তু হয়েছে বিপরীত। রাজা, আগুন ধরিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে সেই শালটি গিয়ে পড়েছে প্রহ্লাদের গায়ে আর সেটি তার শরীরকে জড়িয়ে রেখেছে।
দেখেছি প্রহ্লাদ আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে আর
তোমাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ। রাজা, মারতে পারলে না তাকে বরং আগুনে পুড়ে মরতে হলো হোলিকাকে।
এরপরও তুমি রক্ষা পেল কৈ! বিধাতার এই কি ইচ্ছা ছিল? দেখেছি বিষ্ণু তোমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে নৃসিংহ অবতার রূপ ধারণ করে তোমাকে করলো হত্যা।
রাজা, সেই যাত্রায় এভাবে হলো অশুভ শক্তির বিনাশ।
দেখতে যদি আজও হচ্ছে এর পুনরাবৃত্তি। সেই থেকে আজও ফাগুনের পূর্ণিমার সন্ধ্যায় পালিত হচ্ছে ন্যাড়া পোড়া।