নদীতীরে অনেকটা সময় কেটেছে
দেখেছি সে নেই আর, ভরা জোয়ারে নদীতে জল যা ছিল।
বলা ভালো, ভাঁটার টানে জল পৌঁছেছে এমনি তলানিতে
সাধ্য কার আছে যে নদীর জলে সাঁতার কাটে?
নদী, প্রস্থে বেশ সরু হয়ে এসেছে
এখন বেশ স্বচ্ছন্দে দেখা যাচ্ছে ওপারে কী আছে।
দেখা যাচ্ছে ওই যে গাছে ঝুলছে বহু আপেল ওপার ঘাটে।
ঠিক তখনি কতকগুলো ছেলে-মেয়ে ভিড় করেছে এই বাটে
তাদের সামর্থ্য আছে বৈকি ওপারে যেতেই পারে সাঁতার কেটে।
মন মানেনি, ভেবেছে সাঁতার কেটে পৌঁছবে সেই ঘাটে
তবে আর দেরি কেন? কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে জলে,
তাদের কেউ কি জানতো তাদের জন্য কী অপেক্ষায় আছে এই ঘোর কলি কালে?
জানতো যদি কুমিরের মতো কিছু একটা জলে ওত পেতে আছে,
জলে নামলেই পড়বে ওর পাতা ফাঁদে।
দেখেছি সাঁতার কাটতে গিয়ে তারা সকলেই ঠেকেছে পাঁকে।
তারপর? সাধ্য কার আছে পাঁকে সাঁতার কাটে?
সাধ্যমতো চেষ্টা করেও বিফল হয়েছে পাঁক থেকে বেরিয়ে যেতে,
দেখছি সাঁতার কাটতে গিয়ে এখন পাঁকে খাচ্ছে গড়াগড়ি।
কে বলতে পারে, সেখানে কোথাও নেই কোনও চোরাবালি?
যদি থাকে তখন দেখা দিতে পারে আর এক বিপত্তি
তাদের জীবনে দেখা দিতে পারে সীমাহীন দুর্গতি,
তলিয়ে যেতেও পারে চোরাবালিতে
ঘাটে বসে বললো এক বৃদ্ধ, এই ঘাটে নাকি প্রায়শ এমনি ঘটে।
জিজ্ঞেস করেছি তাকে জোয়ার আসতে হতে পারে আর কত দেরি?
বললো সে, ভাঁটা চলেছে তো দীর্ঘকাল, চলবে আর কতকাল?
নদীর যা ভাবগতি ভাঁটার হয়েছে ইতি।
নিশ্চয় এবার জোয়ার আসার হয়েছে সময়
শরীরে বাড়লো হৃদস্পন্দন, মনে মনে ভেবেছি সেই যেন হয়।
অচিরে আসতে শুরু করেছে একের পর এক ছোট-বড় ঢেউ
ওদের কেউ কেউ ছেলেমেয়েদের সাথে খেলছে যেন কানামাছি!
বুক করছে দুরু দুরু, এরপর কি জানি কী হয়!
করতে পারিনি আর একটুও দেরি
মহাকাল বৃক্ষের গায়ে ঠেস দিয়ে বসে
আরাধ্য দেবতার নাম জপ করছি আর ভাবছি
পাঁকে আর আটকে পড়ে থাকে না যেন ছেলেমেয়েদের কেউ।