মন্দিরে ঢং-ঢং করে বেজেছে কাঁসর-ঘণ্টা।
খ্যান্তা-পিসী স্নান সেরে নতুন পোশাকে এসে
পূজার নৈবেদ্য সাজিয়ে মণ্ডপে বসে গাইছে
শিবের নামগান।
চড়ক-ডাঙ্গার গাজনের মেলা। খোলা মাঠে
বাড়ছে ভিড়। অধীর আগ্রহে দূরদূরান্ত থেকে
বহু মানুষও মেলায় এসেছে দেখতে গাজন
সন্ন্যাসীদের নাচন।
এখন ধূম পড়েছে এই মেলায় কেনাকাটায়।
খানাপিনাও চলছে সেই সাথে।
বলছে ক’জন, এখন মরা গাঙেও জোয়ার
এসেছে। দেশে গাজন-সন্ন্যাসীরা কি কম
আছে?
দেশকে ধন্য করতে তাদের অনেকে নাকি
তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করেও মেলায়
এসেছে। আরও আসছে নাকি দলে দলে
পা-চালিয়ে। সকলেই পথে ভোলাবাবার
স্তুতি করছে বেশ জয়ঢাক বাজিয়ে।
অদূরে কল্কিতে তামাক সাজিয়ে ক’জন
এখন ঠায় বসে রয়েছে অগ্নি-সংযোগের
অপেক্ষায়।
বলছে তারা, তাতে অগ্নি-সংযোগের পরে
আর যায় কোথায়? কল্কিতে টান দিলেই
জুড়বে নাকি তাদের মনঃপ্রাণ।
তুমি তো মনস্থির তো করেছিলে মেলায়
আসবে। বলতে, গতর না-খাটালে নাকি
চলবে।
শিবঠাকুর সাজলে হলো। কাঁধে তুলে ভার
বইতে অনেকে রাজি হবে। এইসময় গতর
না-খাটিয়েও মেলায় পৌঁছনো যাবে।
তবে আসার পথে বেশ কানাঘুষো শুনেছি,
শিবঠাকুর সেজে যাদের ভরসায় বসেছিলে
তারা নাকি পাঁকালো ঘোঁট? সকলেই নাকি
শলা-পরামর্শ করে জোট বেঁধে তোমাকেই
না-নিয়ে মেলায় চলে গেছে?
তুমি এখন করবে কী? গতর খাটিয়ে শেষ
বেলায় মেলায় পৌঁছেও কি আসর জমাতে
পারবে?