প্রিয়তমা,
জানো,একটা ছোট্ট পুতুল-জোকার রয়েছে
আমার ঘরে টেবিলের উপর,বিছানার খুবই
কাছাকাছি।তাকে কিনে এনেছি ফুটপাথের
এক দোকান থেকে।
তার গলা স্প্রিং দিয়ে গড়া।ধনুকের মতো    
অদ্ভুত বাঁকানো শিরদাঁড়া।বেশ বড়োসড়ো
একটা কালো টুপি আছে শিরে।চোখে ভারি
সুন্দর একটা নীল চশমা।মুখে কাঁচা-পাকা
গোঁফ দাড়ি।হাতে লাঠি।একটু হাওয়া পেলে                
স্বচ্ছন্দে জোকারটির মাথা নড়ে।  
প্রিয়তমা,তোমাকে বলবো কী,সে অপলকে
আমার দিকে তাকিয়ে আছে।সিলিং ফ্যানটা
ঘুরছে ঠিক তারই মাথার উপর।সে হয়তো  
সেই আনন্দে মাথা নাড়ছে নিয়ত।
বারবার তাকে বলি আর পাণ্ডিত্য দেখাতে
হবে না বিজ্ঞের মতো,কিছুতেই শুনছে না।
কখনো হচ্ছে না সংযত।এমনি নিরীহ বেশ,
তবুও তার এই বিয়াদিপনা কত সহ্য করা
যায় বলতে পারো?
কথায় বলে ঘরপোড়া গরু নাকি সিঁদুরে
মেঘ দেখলে ভয় পায়।আমার সেই দশা।  
ভুগছি তেমনি দুর্দশায়।প্রায়শ বুক কেঁপে
ওঠে ভয়ে।মৃদু ভূকম্পন হলে যেমন হয়
দেহের ভেতর।ভাবি,আরও কোন বিপত্তি
ঘটবে নাকি?এই পর্যায়ে এসে দুঃখ কষ্টের
কিছুটা হয়তো এখনো আছে বাকি।
জোকারটা হয়তো সে-কথাই বলতে চায়
তার ঘাড়টি নেড়ে।হয়তো দেখছে দুর্যোগ
দুয়ারে,বিপত্তি আবার আসবে ফিরে।
প্রিয়তমা,জানো বিদেশ বিভূঁই থেকে ফিরে
এলো অজস্র নরনারী।ওরা যখন করোনায়
সংক্রামিত হয়ে ফিরলো দেশে,তখন বোঝা
যায়নি এই দেশে ঘটবে এতখানি ব্যাপক
করোনার সংক্রমণ।প্রাণান্তকর হতে পারে
সবার জীবন ধারণ।পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ
হচ্ছে দেখে সরকারকে লক-ডাউন ঘোষণা
করতে হলো এখন।
গৃহ বন্দী হয়েই আছি।তোমরা ও যাবে না
বাইরে।ঘরে থাকো,সরকারী নির্দেশ মেনে।
এখন এটুকু থাক।আবার কথা হবে পরে।
                               ইতি
                         তোমার প্রাণেশ্বর