ক’বছর আগেও দেখেছি নিশ্চিন্ত-পুরের বিশাল
খেলার মাঠের প্রবেশ পথের পাশের সেই অর্জুন
গাছটা সটান দাঁড়িয়ে থাকতো নির্ভীক প্রহরীর
মতো।সে সময় বিকালে সেখানে রোজ আমাদের
বন্ধুদের সুখ দুঃখের গল্প হতো।
মাঝে কয়েক বছর খোঁজ রাখিনি তার।ইদানীং
দেখছি জলের অভাবে মাটির চরিত্রটাই বদলে
গেছে।রুক্ষ মাটি,তাই তার বাঁচার পথে ঘটছে
অন্তরায়।এখন গাছটি মৃতপ্রায়।সে তার অন্তিম
যাত্রাপথের সন্ধানেই আকাশটার দিকে তাকিয়ে
ধূমকেতুদের মতোই তার যাত্রাপথটির নিশানা
খোঁজ করে।আঁধার রাতে অপলক চেয়ে দেখে
ধূমকেতুরা বুক ভরা অসহ্য দুঃখকষ্টে কিভাবে
নিজ দেহের দগ্ধাবশেষ নিয়ে যাচ্ছে ফিরে।
আজকাল পড়ন্ত বেলায় আমি সেই বৃক্ষের মূলে
বসে তার সাথে কথা বলি বন্ধু-বেশে।শুনি,রুক্ষ
মাটির গল্প।
শুনেছি তার কাছে এখন কুমোরের চাকও নাকি
ঘোরে না আর সময়ের সাথে।মাটিই আর খাঁটি
নাই।কাঁকড়ে কাঁকড়ে নাকি হয়ে গেছে ছয়লাপ।
মৃৎ-শিল্পীদের হাতে আর গড়ে উঠছে না কোন
মাটির বাসন কোসন তাদের সাধের সেই মাটির
দলার অভাবে।প্রতিমা শিল্পীরাও নাকি আজকাল
পূজা-পার্বণেও গড়ে না প্রতিমা।
বললো সে,ইদানীং অনেক পরিযায়ী শ্রমিক প্রাণ
হাতে নিয়ে দুঃখকষ্ট সহে বাঁচার আশায় বিদেশ
বিভূঁই থেকে ফিরেছে ঘরে।সকলে দেখছে এখন
তাদের আশালতাগুলি পড়েছে বিপাকে।এই রুক্ষ
মাটিতে টিকে থাকাটাই কষ্টকর।বিলীয়মান রঙের
মতো বিলুপ্ত হচ্ছে জল ও সারের অভাবে। কেহই
একবারও তাকায় না ফিরে।