বলবো কী, দেবদেবীদের মাহাত্ম্য জানলে
শিহরিত হতে হয়।
জেনেছি মনসামঙ্গল কাব্য পাঠে স্বর্গ থেকে
মর্তে এসেছিলেন নাগ-দেবী মনসা।
দেবী চেয়েছিলেন মর্ত-বাসীদের পূজিতা
হতে। ভাবলেন নাগদেবী, জনসমক্ষে তাঁর
মাহাত্ম্য প্রচার করলেই মর্তবাসীরা করবে
তাঁর পূজা আর এই পরিকল্পনা কার্যকরী
না-হলে ছলে বলে হলেও তাকে করতেই
হবে কার্যসিদ্ধি।
বোঝাতে হবেই জনগণকে, কেউ করলে
তার বিরুদ্ধাচরণ, নির্ঘাত মতিভ্রম,ব্যাপক
অনাচার। এ কর্ম করে পায় না ছার।
নজির তুলে ধরলে সকলেই ভীতসন্তস্ত্র
হবে বৈকি। জানাতে হবে এই নাগ দেবী
কোপিত হলে ঘটতে পারে কত কী!
ধনী ও প্রতিপত্তিশালী চাঁদ সদাগরের
ও ছাড় আছে নাকি?
সত্যি তো, ডুবলো তার সাতটি বাণিজ্য
তরী। এখানে শেষ হলো নাকি? দেবীর
আক্রোশে সদাগরের পুত্র লখিন্দরের
ও সর্পাঘাতে মৃত্যু হলো।
দেবীর মাহাত্ম্য থেকে জানা গেল শেষে
সদাগরকে দেবীর পূজা দিয়ে শাপ মুক্ত
হতে হলো।
তার হারানো সব সম্পদ? সেও ফিরে
পেলো।
মর্তবাসীরা বুঝলো বৈকি, প্রতিপত্তিশালী
সদাগরের যদি এ দশা হয়, তবে অনাচার
করে নাগ দেবীর শাপভ্রষ্ট হলে বাকিদের
কী হতে পারে? তাদেরকে খেতে হতেও
পারে নাগনাগিনীদের ছোবল। বিষে দেহ
হতে পারে বিকল।
এই ঘটনা জেনে অনেকেই ভয়ে কুঁকড়ে
গিয়ে ঘরে ঘরে দেবীর পূজা শুরু করলো।
বলবো কী আর তখন লতানো লাউডগার
মতো দ্রুত সমাজে ছড়িয়ে পড়লো দেবীর
মাহাত্ম্য।
শুনেছি কালের স্রোতে মরা গাঙে বহমান
কচুরিপানার মতো দেবীর মাহাত্ম্যও নাকি
গতি হারা হলো।
ক’জন সাধারণ জনগণ এ দেবীর পূজা
করতে অনীহা দেখালো। বোঝেনি তারা
নাগনাগিনীদের কানে এ খবর পৌঁছলে
কী হতে পারে পরিণতি?
বাঁচার উপায় খুঁজতে গিয়ে করতে হবে
আত্মশুদ্ধি।
আত্মশুদ্ধির উপায়? মাইল খানেক নাকে
খত, জনসমক্ষে প্রকাশ্য রাস্তায়।  
হাসিমুখে এই কাজ সমাধা করবে না,
সে কি হয়?