বলতে ও কষ্টকর,শুনেছি কাকাতুয়ার কাছে নাকি
বার্তা এসেছে,সুন্দরবনে বসবাসকারী দীন দরিদ্র
মানুষদের বাসভূমি ধ্বংস করতে উদগ্রীব হয়েছে
প্রলয়কারী আরও কিছু সামুদ্রিক ঝড়।ওরা গভীর
সমুদ্রে নাকি করেছে নোঙর।
হায়রে!দুস্থ মানুষদের স্থায়ী সর্বনাশ পৌঁছে গেছে
দুয়ারে।সেখানের বহু মানুষের আত্মবিশ্বাস পৌঁছে
গেছে তলানিতে।ঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা শুনলে
ওরা ভয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কষ্ট সহ্য করে জেগে
থাকে অষ্টপ্রহর।কাকাতুয়া বললো এখন যা অবস্থা
হয়েছে,ওরা যতই সজাগ থাকুক না কেন,ক্ষয় ক্ষতি
রোখা কষ্টকর।
তাদের দুঃসহ অবস্থা ব্যক্ত করতে গিয়ে সে বলে
গেল কঠিন পাথর ক্ষয় হবে জেনো,কিন্তু আত্মীয়
পরিজন হারিয়ে মর্মাহত হয়েছে যারা,বেঁচে থাকা    
সেই মানুষদের মর্মবেদনা মুছবে না কখনো।
ভাবতে ও কষ্ট হয়,কতিপয় মানুষের কৃতকর্মের
ফলভোগ করতে হচ্ছে তাদের।দুস্থ এই মানুষেরা
বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সহায় সম্বলহীন হয়ে
বিষধর সাপ ও হিংস্র বাঘদের অভয়ারণ্যে দুঃখ
কষ্টকে বুকে আগলে রাত কাটায় উন্মুক্ত স্থানে।    
কে জানে!কী যে ঘটবে তাদের জীবনে আগামী
দিনে।
একেই ‘ভাগ্যের বিড়ম্বনা’ বলে কিনা জানি না,
নিদারুণ কষ্ট সহে খোলসের ভিতরে ঝিনুকদের
মতো যাদের বেঁচে থাকতে হয়,কতটা দুঃখ কষ্ট
জেগে থাকে তাদের মনের ভেতর,সেসব আজও
অনুভব করে না অরণ্য নিধন যজ্ঞে মাতোয়ারা
সেই মানুষেরা।একবারও এদিকে ফিরে তাকায়
না তারা।
সংকটে জেলিফিশের মতো ভাসমান দুস্থ সেসব
মানুষেরা আবারও কোমর বাঁধে বাঁচার অদম্য
স্পৃহায়।তারা রাত পোহালে আবার পা বাড়ায়
খাঁড়িতে কিংবা নদীতে মীন ও কাঁকড়া ধরার
কাজে।দেখি,সেই মানুষেরা সদলে চলে যায় ঘন
অরণ্যে মধু সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করার
তাগিদে।
বনে বাঘ আর জলে কুমীরের ভয়কে জয় করে
বেঁচে থাকা,এ যেন এক দুর্বার দুর্জয়।বিপর্যয়ের
মুখোমুখি হলে,লড়াই সংগ্রাম করে বিফল হলে
কখনো কখনো তাদের প্রাণ হারাতেও হয়।
কাকাতুয়া ঘুরে দেখেছে বিধবা পাড়া।শুনেছি তার
মুখে সে নাকি দেখেছে সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে
সহায় সম্বলহীন বিধবা নারীদের জীবনধারা।কত
কষ্ট করে বেঁচে আছে তারা।