রোদ চশমা পড়ে এক দিনদুপুরে
এই কোলকাতাকে দেখতে বেরিয়ে
দেখেছি গাড়িদের নিঃসৃত ধোঁয়ায়
কালি জমেছে তার অন্তরে বাহিরে।
চারদিকে ইতিউতি হচ্ছে আলোচনা
দুরারোগ্য সেতু নিয়ে কত জল্পনা।
তার্কিকেরা গোল হয়ে তর্ক জুড়ছে
বুদ্ধি-দীপ্ত প্রতিভার সন্ধান মিলছে।
চায়ের আসরে জমছে সহস্র লোক
সেসব শুনে সেথায় সবাই মশগুল।
কেহ তির্যক মন্তব্য জুড়ছে বিলকুল
আলোচনায় মাতৃভাষা সমৃদ্ধ হোক।
দেখেছি সেতুগুলি অতিবৃদ্ধের মতো
কোমর বাঁকিয়ে সদা কম্পিত পায়ে
হতাশায় চেয়ে আছে সাহারার মতো
দূর আকাশের দিকে অবাক বিস্ময়ে।
দেখেছি মাঝের হাট ও পোস্তা গিয়ে
সুবৃহৎ উড়ালপুলদের দ্বিখণ্ডিত দেহ
যাগযজ্ঞে বলি-তে হত পশুর মতো
জনসমক্ষে রয়েছে পুলদের মৃতদেহ।
নড়বড়ে উড়ালপুলদের উপর দিয়ে
মৃত্যু ভয়ে পেরিয়েছি এক নিঃশ্বাসে
বন্দী বাঘিনী মুক্তি পেলে যে বিশ্বাসে
প্রাণের ভয়ে পালিয়ে যায় ঊর্ধ্বশ্বাসে।
দেখেছি উড়ালপুলের উপরে ও নীচে
নিরুপায় জনসাধারণ অতিশয় ভয়ে
বিপদ-তারিণীকে প্রণতি স্মরণ করছে
যেন বাড়িতে ফিরতে পারে নির্ভয়ে।
পুলের নীচে দোকানিরা প্রাণের ভয়ে
নিত্য আরাধ্য দেবতাকে করে স্মরণ।
তাদের গৃহবাসী সব আত্মীয় পরিজন
দুর্ভাবনায় দেবদেবীকে করে নিবেদন।
আশ্রয়হীন শিশু সহ বিপন্ন নর-নারী
যারা শীত,গ্রীষ্ম,বর্ষায় মাথা বাঁচাতে
উড়ালপুলের নীচে নিত্য নিয়েছে ঠাঁই
আজ রাত কাটাবে উন্মুক্ত ফুটপাথে।
পাথরের উড়ালপুলদের ভাঙ্গন এখন
শুধুই সময়ের অপেক্ষা।জনগণ তখন
আশু প্রয়োজনে আর্ত সেবায় মাতবে
পরিশেষে সবই ইতিহাস হয়ে থাকবে।