চৌদ্দতে পা পড়তে না পড়তেই বয়স আমার আঠারো
শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরতে হবে আমাকে
পঙ্গু বাবার সেবা; ছোট ভাইবোনদের লেখাপড়া
এসব সামলাতে নাকি আমাকে পুরুষ হতে হবে
পুরুষরাই নাকি সব পারে; নারীরা ঘরের বোজা
ধীরে ধীরে আমি পুরুষ হতে লাগলাম, গার্মেন্টস কর্মী হলাম
বাড়িতে বাড়িতে মায়ের ঝি এর কাজ আর আমার গার্মেন্টস
দুই মিলে নয় ছয় করে কোন মতে চলছিল সংসার
ছোট ভাইটি এখন বড়; রোজগার করে একটু আধটু
আমাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে; বয়স এখন পঁচিশ
আমাকে বিয়ে করবে কে; আমি যে একজন দুষিত নারী
পাখি ডাকা ভোর থেকে ঘোর অবদি গার্মেন্টস করি
শ্রম বিক্রি করি; শ্রম বিক্রি করেই ক্ষান্ত হইনা
টার্গেট পূরণ করতে কখনও বসদের কাছে জাত বিক্রি করি
ঘটক মশাই ঘাটে ভিড়েনা; কোনভাবে ঘটক ম্যানেজ হলেও
বর পক্ষ গার্মেন্টস কর্মী শুনেই শান্তি; গল্প এখানেই শেষ
মানুষ সামাজিক জীব; গার্মেন্টস কর্মীরা মানুষ নয়, অসামাজিক
গার্মেন্টস কর্মীদের শরীর থেকে ময়লার গন্ধ আসে
এদের বিয়ে করবে কে; এদের বিয়ে করলে বংশের মান যাবে
বয়স আমার এখন ত্রিশ ছুঁই ছুঁই; কি করবো বলুন
আত্মহত্যা করবো; না আত্মহত্যা করা নাকি মহাপাপ
আমি এখন গার্মেন্টস কর্মী নই।যৌবন বিক্রি করি; যৌনকর্মী
আমার খরিদদারের অভাব নেই, যারা বিয়ের আসর থেকে পালালো
এরাও আমার খরিদদার।আমার শরীর থেকে এখন সুগন্ধি ছড়ায়
সমাজের চোখে আমি এখন নর্দমার কীট, একজন নর্তুকী
সমাজের মানুষগুলো আমার চোখে কি তা সবাই বুঝছেনতো?


রচনাকালঃ ২০/০৮/২০২০
স্থানঃ রামপুরা,ঢাকা