তুমি কি স্বাধীনতার থেকেও দূরে?
বইয়ের পাতায় পাতায় রক্তক্ষচিত অক্ষর লেখা হয়ে গেলেও,
আমি এখনো স্বাধীনতাকে পাই নি।
উনপঞ্চাশ বছর পাড়,
তবুও আমি এখনো আহত,
আমি এখনো তোমাকে পাই নি,
তুমি কি আরও বেশি দূরে?
রাস্তায় রাস্তায় রক্তের দাগ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে কবেই,
তবুও এখনো রক্তের দাগ পড়ে,
কৃষকের গা বেয়ে রক্ত ঝরে আমাদের রক্তচোষা মাটিতে,
বৃষ্টির জলে মুছে যায় রক্তের দাগ,
আবার রক্ত ঝরে, আবার মুছে যায়, আবার রক্ত ঝরে,
ঠিক আমার রক্তাত্ব হৃদয়ের মতো,
তবুও বৃষ্টির স্বাদ আমি এখনো পাই নি,
যেমন পাই নি আমি তোমায়।
যেমন চেয়েছিলাম আমি স্বাধীনতা,
তুমি কি স্বাধীনতার থেকেও দূরে?


এখনো প্রায় রোজ নির্ঘুম রাত কাটে,
রাত্রির নির্জনতা ভেদ করে আসা কান্নার শব্দ শুনি,
শুয়ে শুয়ে কান্নার শব্দ শুনি, ঠিক আমার মায়ের কান্নার মতন,
ঊনপঞ্চাশ বছর আগে আমার মায়ের কান্নার মতন,
কান্নার উৎস খুঁজে বেড়াই,
আমি খুঁজে পাই না,
যেমন খুঁজে পাই না আমি স্বাধীনতা,
যেমন পাই নি আমি তোমায় আজও।
শোষকের চোখে মুখে দেখি উল্লাস,
পেয়াদার  বত্রিশ পাটি দাঁতে খলখল পৈশাচিক হাসি,
কৃষাণের চোখে এখনও দেখি জল,
কবির চোখে ফুটে ভয়, পড়ে  বিষণ্ণতার ছাপ,
যেমন ভয় পাওয়া থাকে আমার চোখ,
তোমাকে না পাওয়ার ভয়ে।
ঠিক যেমন বিষণ্ণ আমার চোখ,
যখন আমি পাই না স্বাধীনতা,
আর আমি পাই না আমি তোমায়,
তুমি কি স্বাধীনতার থেকেও আরও দূরে?