ঘুরে ফিরে একই ছক প্রতিদিন,
বাড়ি থেকে অফিস, আর,
অফিস থেকে বাড়ি,
একই মুখ দেখে দেখে
মুখস্ত হয়ে গেছে,
কার আছে সাদা গোঁফ, আর,
কার আছে একমুখ কাঁচাপাকা দাড়ি ৷
ভোরবেলা দাঁত মেজে
রোজ চান করা,
নাকে মুখে দুটো গুঁজে
ছুটে বাস ধরা ৷
সাড়ে দশ বেজে যায়,
রোজ লাল দাগ,
সাহেবের ধমকানি,
সাহেবের রাগ ৷
রোজ রোজ একই কাজ
একই মাছি মারা,
ফাঁকতাল খুঁজে নিয়ে,
রোজ কেটে পড়া ৷
মাঝে মাঝে ডুব মারা,
মাঝে মাঝে ফাঁকি,
ক্যাজুয়্যাল লিভ আছে
এক আধটা বাকি ৷
সন্ধ্যের আড্ডাতে একই লেকচার,
কার ঘাড়ে কটা মাথা, কার বাঁশে ঝাড় ৷
পরদিন ভোরবেলা
ফের চান করা,
নাকে মুখে গুঁজে নিয়ে,
ফের বাস ধরা ৷
দিনগুলো যেন সব যমজ সন্তান !
চোখে ঠুলো, পিঠে কুলো, কান শোনে ধান!
আজকাল মনে হয় এই আছি বেশ,
এভাবেই হয়ে যাবে জীবনের শেষ৷
তবু মাঝে মাঝে কেন ছুটি চায় মন,
মনে হয় হেথা নয় অন্য কোথা,
প্রাণের স্পন্দন ৷
হৃদয়ের এক কোণে বেজে ওঠে সুর,
ভালো লাগে রবীন্দ্রসঙ্গীত, আর -
বারান্দায় রোদ্দুর ৷
মধ্যবিত্ত জরায়ু ছিঁড়ে,
হরিপদ কেরানীরা জন্ম নেয় ৷
জন্ম নেয় আর জন্ম দেয় শুধু -
অভ্যাসের বশে ৷
পালে পালে গন্ডায় গন্ডায়,
প্রকৃতির বৈধ সন্তানদল
বৈধ পথে যাহাদের সবর্দা চলাচল ৷
বাড়ি থেকে অফিস, আর,
অফিস থেকে বাড়ি,
স্বপ্ন শুধু পুজোর বোনাস,
পুজোয় নতুন শাড়ি ৷
চুষিকাঠি, টোপর আর শেষে নিমতলা,
এই নিয়ে গড়ে ওঠে জীবনের মেলা ৷
আসা যাওয়া, ভালোবাসা, মেলা হইচই
রাস্তায় পড়ে থাকে শুধু কিছু খই ৷
শেখা হল পৃথিবীর সবকটা ভাষা,
তবু কেন জেগে থাকে অনন্ত জিজ্ঞাসা ?
গ্লানিময় দিনযাপনের মাঝে
অবিরাম কার বাঁশি বাজে
ফিরে ফিরে কেন খালি ছুটি চায় মন,
অকারণে খুঁজে ফিরি, প্রাণের স্পন্দন ৷