আজকের সুশান্ত ভোরকে বিচিত্র কুজনে বিদীর্ণ করে
শেষ পাখিটি আকাশ কাঁপিয়ে উড়ে গেলো বনে
আমার চোখে জমিয়ে গেলো ছলোছলো জল।
খান মাহমুদের উশকো-খুশকো ছেলেটি
মফস্বল ছেড়ে পড়তে গেলো তিলোত্তমা শহরে।
আর আমি-
ছেঁড়া সেন্ডেল পড়ে চাখতে এলাম সকালের চা
আমাকে করতে হবে দুপুরের রোজগার
রাত অবধি শুনতে হবে ভাঙা ফোনের আর্তনাদ।


গলির মোড়ে কুজু হয়ে বসে থাকা মুচির মেয়েটিও
বেলা দশটায় আমাকে ডিঙিয়ে পার্লারে যায়
এখন তার সমৃদ্ধ হয়েছে যৌবন; পথের ধুলি মাড়িয়ে
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ঢুকে পড়ার ক্ষমতা-
আমার চেয়ে ঢের বেশি পেয়েছে পুঁচকে মাস্তান।
আমার ফোনে নেই টাচস্ক্রীন, এখনো নেই অ্যান্ড্রয়েডের জৌলুশ
অপেরা-মিনির ব্যবহার সেই আজ ভালো জানে
যে আমার বোনকে মারে সিটি, মধ্য দুপুরে পথে
ওড়নায় মারে টান; বিমলের সেলুনের গ্লাসে-
যে আঁকে সমসাময়িক দাঁড়ির বাহার, হাতে ঝুলায়
(সম্ভাবত) লালী মাখা কোনো দরগার সুতো।


আজ রাতে আমি বিছনায় যাবো না।
পাশের বাড়িতে জন্মদিনের মচ্ছবে কামলা খাটবো
শেষ রাতে আপত্তিহীন খাবো মুরগির রোস্ট
শুঁকবো বাসি হতে যাওয়া কেকের ঘ্রাণ।
আর যদি
প্যারিস ফেরত ছেলেটি কাছে ডাকে, লুকাবো না
তাঁর পেছনে হাঁটবো স্বইচ্ছায়, আগ বাড়িয়ে গুছিয়ে দেবো হেডফোন, বলবো-হাই, হ্যালো, হুয়াটস্ আপ!
অতঃপর, অন্তত কেটে যাবে ফেসবুকে রাত
চাখবো অজ্ঞাত সেলিব্রেটির উদ্দাম ন্যূডিটি, উলঙ্গ রূপ।


জোর করে ফুল ফুটিয়ে কাজ নেই।
বরঞ্চ, নদীর পাড়ে বসে খাবো ফাল্গুনি হাওয়া
সহসা ললাটে বলিহারি প্রজাপতির স্পর্শ পেলে
নিষ্পলক দেখে যাবো ফ্রেমে বাঁধানোর মতো ছবি।
আমি ভুলে যাবো যতোসব ব্যথা
আমি খুব করে মেনে নেবো, যা কিছু আপগ্রেট-অসুন্দর,
তার কিছুই আর আমার জন্য নয়।