খাসি'দের গৃহ খানি পাহাড় উপরে
সবুজে সাজানো জুম থরে বিথরে।
মহীধর'পরে সারি সারি করে ঘরের বাঁধন,
পুঞ্জির মানে পাশাপাশি বাঁধাঘরে পাহাড়ি জীবন;
একটা পাহাড়'পরে বাসা বাঁধে গাঁয়ের সকল জনে
বাকি চারিধারে পানের জুম— সবুজের মায়াকাননে।


প্রতিদিন ভোরে চলে যায় জুমে খাসিয়া পুরুষ
ব্যকুলতা লয়ে সন্ধ্যের পথপানে চায় রমনীর নেত্রকোষ!
বাঙালি মেয়ের মতোন তা'রাও চেয়ে রয় সাঝের বসন্তপানে
ফিরিবে কি ফিরিবে না কত আকুলতা তাহারাই জানে!
গোধুলিতে ঘরে যবে ফেরে প্লাবনেচ্ছার প্রিয়জনে
ক্লান্তিরা মুছে যায় দিনমান জমাট গল্পের আলাপনে।


কত জনে কত নিত্য আসে-যায় দেখিবার
বাঁশের বেড়ায় বাঁধা ছোটো ছোটো ঘর— পাহাড়ে সংসার।
সকল অতিথিরে সুহৃদ আপ্যায়ন তা'রা করে
চায়ের পেয়ালা নতুবা পান-সুপোরির থালা খানি ভরে।
সহসা কখনও গেলে নয়নগোচর হবে
রুয়াকে ছড়ায়ে পান কত মেয়ে পানগুছিয়া রবে।


পুঞ্জির চালক যিনি "মন্ত্রী" তাঁহাকে বলে
তাঁহার আদেশ বাণী মানে সকলে।
করেছে যে জন বিষাদ–বিশৃঙ্খলা সৃজন,
মন্ত্রীর আদেশবলে অজানায় দূরে হবে তার নির্বাসন।
সমতলের মাতবরকে কইবার মত কেউ নাহি কয়,
"আপনার মাটি-বাটি আপনার খেয়ে রই,
আদেশ দিবার তুই কোথাকার কোন্ শালা!"
প্রশান্তির স্থান এখন তোমার খুঁজিবার পালা।
আমি তো পেয়েছি ঠাঁই পুঞ্জির প্রশান্ত নীড়ে—
সুন্দর সুশীতলে পুঞ্জির বনছায়াতলে হৃদয় গভীরে।।


05/02/21
ঘোষবেড়, হালুয়াঘাট