আজ তোমার জন্মদিনে
তোমার মূর্তির সামনে আমরা দাঁড়িয়ে নেতাজি।
আসমুদ্র হিমাচলে তোমার নামে জয়ধ্বনি,
শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত আকাশ বাতাস অরণ্য।
তোমার মূর্তি, তোমার প্রতিকৃতি ফুলে ফুলে
মালায় মালায় সজ্জিত সুবাসিত অপরূপ।
কত নেতা মন্ত্রী গণ্যমান্য অতিথিবৃন্দের ভাষণ,কত শত প্রতিজ্ঞা আর প্রতিশ্রুতির বাৎসরিক সাতকাহন,
আর সমবেত জনতার মুহুর্মুহু গগনবিদারি করতালি।তোমাকে ঘিরে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হবে,মৃদু শীতের হাওয়ায় তেরঙা পৎপৎ পত্পৎ উড়বে।আজ তোমার জন্মদিনে, প্রিয় নেতাজি
চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে উৎসবের মহামিছিলের সুখ।তারপর? তারপর সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়িয়ে অপরাহ্ন বেলা। মন পাগল করা তোমার ঐ ছবিটি সরিয়ে ফেলা হবে,তেরঙা নামিয়ে,তোমাকে প্রদত্ত ফুল মালা ধুলোয় মিশিয়ে সাঙ্গ হবে প্রেম প্রেম এই এক প্রহরের খেলা।তোমার জন্মোৎসবের সকল ঝক্কি সকল হ্যাপা সামলে আবার শীতঘুমে চলে যাবো সবাই তোমার আগামী জন্মদিনের অপেক্ষায়।
# কিন্তু কিছুই বদলাবে না মানুষের রক্ত ঘাম ক্ষুধার রোজনামচা।কৃষক পাবেনা ফসলের দাম, শ্রমিক কাজ হারাবে রোজ, যুবসমাজ হতাশায় ডুবে যাবে সারাক্ষণ,ক্ষুধার্ত শিশুর মুখে দুধ না জুটলেও
পাথরের মূর্তি স্নাত হয়ে নর্দমার নোংরা জলে ঘটে যাবে শ্বেত বিপ্লব। নেতাজি তুমি শোনো, বাঁচার দাবিতে মানুষ শ্লোগান দিলে গুলিবিদ্ধ হবে, মোটরের চাকায় পিষ্ঠ হবে, নারী ধর্ষিতা হয়ে খুন হবে,প্রতিবাদী যুবক গুম্ হয়ে যাবে,মানুষ বিনা চিকিৎসায় ভুল চিকিৎসায় মরবে, নেতা,পাড়ার মস্তানের শাসানি খেয়ে মরে মরে বাঁচবে, কতশত গৃহহীন হবে,নিজ দেশে পরবাসী হবে,বিনা দোষে জেলের অন্ধকারে দিন কাটাবে নেতাজি।
#তুমিই তো বলেছিলে প্রিয়,- সবার জন্য খাদ্য, সবার জন্য বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য রাষ্ট্রকে সুনিশ্চিত করতে হবে। তবেই তো স্বাধীনতা,এক সাগর রক্তের বিনিময়ে প্রাপ্ত স্বাধীনতা সফল হবে। অন্যথায় সব ঝুটা। তুমিইতো বলেছিলে নেতাজি!
#তোমার মূর্তির সামনে আজ তোমাকে নালিশ জানাতে এসেছি। আমরা ভালো নেই প্রিয়। প্রবল ইংরেজ বিদায় নিয়েছে কতকাল হয়ে গেছে। আমরা তবু একটুও ভালো নেই ভালো নেই ভালো নেই।তুমি ফিরে এসো প্রিয় নেতাজি।আমরা একদম ভালো নেই।