হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি বিপরীতে, প্রিয়তমাকে
তুলে দিয়ে অন্য একজনের হাতে।
বাঁকা আলপথ, বিস্তৃত অবারিত ফসলের মাঠ
সরল মনস্তত্বের জীবনগুলো ছেড়ে
আমি হেঁটে যাচ্ছি একদমই বিপরীতে।
অনিকেতের মত হেঁটে যাচ্ছি নদীর কোমর বেয়ে
অনবরত দিয়ে যাচ্ছি প্রতিমা বিসর্জন কেবল
কেঁপে উঠা জলের মুখরিত উলুধ্বনির আহ্বানে।
প্রথম সভ্যতা থেকে, সকল সভ্যতার শেষ নগরী
পর্যন্ত, যারা দাঁড়িয়ে ছিলো নদীর বাঁকে,
আমি বিসর্জন দিয়েছি তাকেও, আলগোছে।
অংশীদারিত্বের প্রকরণে যে হিসেব, সেখান থেকে
কিছু সময় ধার করেও, শেষমেষ লভ্যাংশ শূন্য।
কেউ কথা রাখেনি, প্রেমিকা, প্রতিমা, সভ্যতা
এবং স্বয়ং বিধাতাও। বিকশিত দন্ত্যে হেসে উঠা
চির ভক্ষক ভগবান, সে তো কেবল বিসর্জনের পুজারি।
সন্ধ্যের মৃদু অন্ধকারে, জোড়া ঠোঁটের মৃদু কাঁপন
সে তো কবুল শব্দে ধ্বনিত হতে হতে, অবশেষে বজ্রনিনাদ।
আমি কষ্ট পাইনি এতটুকু, কাঁধে বহন করে নিয়ে
গেছি তার বাক্স পেটরা। ট্রেনের কামরা জুড়ে নিরবতার
মধ্যে, কি যেন শুনতে পাবো, সে কি যেন বলবে_
শোওওও করে উড়ে গেলো ধবল বক, নিরুত্তর
আমি ধাবমান হলাম বিলের পানির দিকে।
কাঁদামাখামাখি, কাজল বরন চোখ উঁচিয়ে কেউ
একজন অমায়িক বললো, "গাছতলা, বাঁশতলা
ওসব কেবলই কথার কথা, সব ছায়া মেকি, পথিক।
আবছায়া মুহূর্তে সে অন্যের ছায়া।"
সর্বশেষ প্রতীমা, আমার প্রিয়তমকে পুনঃ যখন অন্যের
হাতে তুলে দিই, তখন আসমান জমিন দিগ্বিদিক
কেবলই চিৎকার করে কেঁদেছিলো, আমি তখনও শান্ত।
সান্ত্বনা দিয়ে গেয়েছিলাম,"অভাবী হৃদয়ের
পুনঃপৌনিক হারে প্রেমিক আমি একজনই।"