কালের যাত্রার ধ্বনি শুনতে কি পাও?


কত অকালকুষ্মান্ড জীবন, গত বসন্তের ঘ্রাণ
ডানায় জড়িয়ে ঐতিহাসিকভাবেই থেমে যায় অসময়ে;
থেমে যায় কোন যবনিকাপাত ছাড়াই, বোশেখী
সন্ধ্যার ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত কোন ইতিহাসের গায়ে।
থেমে যাওয়া মানে জীবনাবসান, আর জীবনাবসান
মানেই তো যবনিকাপাত, অকালমৃত্যুও বটে;
কপোতাক্ষ ভাবতে ভাবতে মধুসূদনের যবনিকাপাত
এমনই এক রোমান্টিক গোধূলির সন্নিকটে।
আমি বিদ্রোহী আমি বিদ্রোহী বলে সদা উচ্চ কন্ঠস্বর,
কেমন থেমে গেল! নিঃশব্দেই নিঃশেষ শেষে;
আনন্দময়ী এক দেশজ জীবন জীবনানন্দ, থেমে
গেলো সে, সাথে থামলো দেশ ট্রামের তলদেশে।
অকালমৃত্যু পারেনি এড়াতে সুকান্ত ভট্টাচার্য,
শ্বাসরোধক ক্ষয়রোগে জুটেনি সময় ভাগে;
বয়সের রঙে চোখ রাঙানোর আগেই থেমে গেল জীবন,
অমরতা পেয়ে গেলো সে প্রবীণ হবার আগে।


এভাবেই থেমে যায় জীবন, চরম হতাশে নির্মমভাবে
বিদায় নেয় আগামী, দিন, মাস এবং বছরগুলো;
আর ইতিহাস কেবলই প্রতারিত হয়, মৃত্যুর সাথে রসায়নে,
বন্দী হাওয়ায়, দ্বারে দ্বারে কেঁদে ফেরে আজও, যেন ধূলো।


তারপর এখন শরৎ, মেঘ ভেঙে যায়, নতুন সময়
রচনার স্বার্থে। নতুন শব্দ, নতুন বাসা বাঁধে, নতুন কোন গল্পে;
তাঁরা যারা মহান, সময়ের শৃঙ্খলে হতাশে ফেলে গেছে
চিন্তা, সূত্র। তাদেরই উত্তরসূরী আমি, শব্দ বাঁধি শিল্পে।
পরতে পরতে সাজাই, স্বর-ব্যাঞ্জন রসায়ন,
আকন্ঠ গাঁথি মালা, নতুন যুগের আহ্বানে;
উৎসর্গ করি সেই ইতিহাস যুগে, যেখানে অতৃপ্ত মহানজন
তৃষ্ণার্ত চেয়ে থাকে, কেবলই অশ্রু বহায় আনন্দ ক্রন্দনে।


কালের যাত্রার ধ্বনি শুনতে কি পাও?