আমার বয়স তখন ,18 ছুঁই ছুঁই,
         ভালো মন্দ বুঝতে শিখেছি সবে,
দুঃখের সাথে পরিচয়টাও হলো,
           বুঝেছি,যাবার পথে পাথর পরে রবে।
পিছুটানটা ফেলে এসে সদা
            লাগাম বাধা ঘোড়া হতে হবে,
একটু রেসে পিছিয়ে গেলে বড়ো,
           সমাজ তোমায় নাকচ করে দেবে।
সবকিছুতেই হতে হবে প্রথম,
             দ্বিতীয় হবার সুযোগ টুকু নাই,
পথ যা হোক লক্ষ্য হবে একি,
           মাস গেলে, মোটা টাকার হিসাব চাই।
থাকলে টাকা তবেই তুমি মানুষ
           জ্ঞানের বোঝা না থাকলোই বা পিঠে,
তোমার কথায় সূর্যগ্রহণ ও হবে,
            ঢাকবে সবুজ নিখাদ কংক্রিটে।।
তাই,এই বয়সে অন্ধ হলে তবেই
             বন্ধ ঘরে প্রাণের পরশ জাগে,
বাঁচতে গেলে যন্ত্র হতে হবে..
             বোকার মতন,মানুষ হবার আগে।।
এই বিশ্বে প্রানের অভাব বড়ো,
              যান্ত্রিকতা শহর জুড়ে থাকে,
জীবনের ভয়ে জীবন থাকে ত্রাসে
            জীবন নিয়ে, নিঃসঙ্গতার ফাঁকে।।


আমার বয়স তখন,18 ছুঁই ছুঁই,
          দুঃসাহসিকতা মনের গোপন কোনে,
আন্দোলনে ভিড়িয়ে যাবার ডাক,
           লেলিন,সুভাষ,চে এর কথা শোনে,
জীবন তখন হার না মানার পথে
              এগিয়ে যাই অনিশ্চয়তা নিয়ে,
দাবির আগে সবকিছুতেই রাজি
                হোক না সেটা রক্তের বিনিময়ে।
এই বয়স জানে প্রবঞ্চনার ক্ষত,
              আবেগ দিয়ে ঢাকতে তাকেও জানে,
মাটির গন্ধে হয় এ বয়স বিভোর
                সুর মিলিয়ে সর্বহারার গানে।
এই,বয়সে তখন অসীম ছুয়ার ডাক
             স্বপ্নের ভিড় পাস বালিশে থাকে,
অসম্ভবের সীমা মুছার কথা
                বয়স তখন মনের কোণে রাখে।
হ্যাঁ, এ বয়স প্রশ্ন করতে জানে
               শোষিত হয়ে ,শাসক তোমার আগে।
গুলির শব্দও নোয়াবে মাথা জানি,
               আঠারোর গাওয়া গানের প্রথম ভাগে।
এই আঠারো এই সমাজে সদা
                বিপ্লব আর বিদ্রোহ ডেকে আনে,
এই আঠেরোয় বারুদ ভরা থাকে,
                 অপেক্ষিত জ্বলবার সন্ধানে।


আমার বয়স তখন,18 ছুঁই ছুঁই,
            জীবন পথে বসন্ত দিল ডাক,
ভালোবাসার আবেগ মাখা স্মৃতি
            কোলাজপটে আলগোছেতে থাক,
এই বয়স জানে আগলে রাখার মানে
               জড়িয়ে ধরে পাশ বালিশের মত,
এই আঠারো ভুলিয়ে দিতে জানে,
                পরশ দিয়ে পাহাড় সমান ক্ষত।
অল্প কথায় অভিমানের সুরে,
                 মান ভাঙ্গানো,মন খারাপের দিনে,
এই আঠারো দিকবিদিক ভোলা,
                   কাহিনী নেয়, ছন্দ দিয়ে কিনে।
এই আঠারো বর্ষা বুকে রাখে,
             হারিয়ে যায় ঝরে পরা ফুলে,
এই বয়সই পূজার থালি সাজাই,
              বজ্র হানে পেরিয়ে আসা ভুলে।
এই বয়স রচে, প্রেমের নতুন বাণী,
             ঠিক ভুলের হিসাব রাখে দূরে,
এই আঠারো ,ঝুঁকতে তাদের মানা,
             রক্ত মাখানো জহ্লাদের হুঙ্কারে,
বাঁচার জন্য এই আঠারো বাঁচে,
            এই আঠারো কোথাও থাকেনা থেমে,
ঘুনধরা এই সমাজের বুকে ফের,
           প্রাণ জাগানো আঠারো আসুক নেমে।।