আমায় ছেড়ে ভিনদেশেতে
         কেমনে আছো একলা রাই?
আমি তো রোজ সন্ধ্যা হলেই,
         ডাকচিঠিতে মন পাঠায়।


আজও আমি বিকাল হলেই,
         কামিনী মালা হাতে লয়ে-
বসি গিয়ে সেই চালতা গাছের নিচে।


জানো এখন আমি ইচ্ছা করেই অগোছালো রই,
পেয়ালাটা রাখিনা ঠিক আগের জায়গায়..
জামাগুলো ইচ্ছা করেই এমন পরি....
যেগুলো আমায় ঠিক মানায় না।


জানো কাশির ওষুধটা এখনো দেরি করে খায়,
অফিস যাবার সময় ইচ্ছা করেই
            টিফিন আর ছাতাটা ফেলে যায়।
ঠিক দুপুর 12 টা হলেই....আমি,              
টেলিফোন বুথে গিয়ে এক ঘন্টা অপেক্ষা করি।
অফিস থেকে ফিরে হাত পা না ধুয়েই
                ঘরে ঢুকে পরি।


জানো এখন ইছা করেই আর খাবার আগে,,
                হাতটা ধুই না।।
কিংবা বিছানাতে বইটা খুলে রেখে ...
       এখনো চুপিসারে ঘুমের অভিনয় করি..


আজও আমার হাত থেকে পড়ে কিছু ভেঙে গেলে,
                আমি ঠাকুর ঘরে লুকায়..
এখোনো বৃষ্টি হলেই আমি উঠানে দাঁড়িয়ে
       তোমার ঘরের দরজার দিকে তাকিয়ে থাকি।
আজও গানের একটা কলি করে পরের কলিটা
              শোনার জন্য উৎকন্ঠা হয়ে উঠি।


আজও বাজার গেলেই মনের ভুলে
         মল্লিকা ফুল একছড়া কিনে নিই।
কিংবা চাটার্জী ফার্মেসি থেকে তোমার মাথা ব্যথার ওষুধ টা,আজও রবিবার প্রত্যহ নিয়ে আসি।


আজও বাথরুমে স্নান করার পর
            গামছাটার জন্য চিৎকার করি।
কিংবা খাবার পর হাত ধুয়ে,
           তোয়ালে টা আনার জন্য হুকুম পারি।


ভগবান তোমাকে আমার কাছ থেকে
           কেড়ে নিতে পারেনি,সে ভেবেছিলো
তুমি না থাকলে তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা
                             ফিকে পরে যাবে....
সে ভুল ছিল,তোমার আমার ভালোবাসা ,
   কখনো দৈহিক ছিলো না,তা ছিল আত্মিক।


আজ আঠারো বছর অতিক্রান্ত,
আজও পশ্চিমের খোলা জানলার সামনে,
                 চোখ মুজে দাঁড়ালেই....
তোমায় অনুভব করি,তোমায় স্পর্শ করতে পারি।
তোমার আমার দূরত্ব কখনো আমায় কষ্ট দেয়নি।
তোমার স্মৃতি আমায় শুধু আনন্দই দেয়,
কিন্তু  আর না,এ শরীর আজ ক্লান্ত..
তুমিই বলো....


তোমায় ছেড়ে ভিন দেশেতে
          কেমনে থাকি একলা রাই
আর কতদিন সন্ধে হলে ,
              ডাকচিঠিতে মন পাঠায়।