উদ্বেগের ছাউনিতে সেদিনের বাতাস দমবন্ধ করা দগ্ধতায় জ্বলছিল।
যা ছিল স্থির কিছু মননের আভাসে ঠাসা
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের লক্ষ্যে প্রস্তুত ভয়ার্ত মারাত্মক
চূড়ান্ত মূলস্থে চারদিক সরব করা জিঘাংসার প্রলেপে আঁকা
এক বেহিসেবি অমানবিক আঘাত।
সেদিন বাতাস ভারি ছিল অকাতরে বিলাপে মুখর
আর্তচিৎকারে বেহুঁশ কারও কারও জীবন-প্রদীপ শেষ।
সেদিন ভয়ার্ত আগস্ট একুশে বিলীন হয়ে যেতে পারতো
আরও কতো নিমগ্ন প্রাণের সবুজ নিঃশ্বাস।
আগ্রাসী দিকবিদিকে ছোড়া গ্রেনেডের বিষাক্ত স্প্লিনটারে
কাবুকরা বিপরীতের বেধড়ক তামাশায় রচিত
তিতিক্ষার লালসায় গর্হিত সর্বনাশা অবিচারে
প্রেক্ষাগৃহে চলা চিত্রজালে ধারিত ধাবমান যুদ্ধক্ষেত্রের মতো
একেক করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে
সময়ের প্রায় সব সরব মুখেরা।
শেষ নিঃশ্বাসের টানে আবদ্ধ প্রশ্বাসে ছিল
কাতর করা জীবনের প্রচণ্ড গভীর উন্ময়ি আক্ষেপ।
আগস্ট একুশে; এ যেন ছিল বিকট শব্দে গ্রেনেডের আওয়াজে
কর্ণমূর্ছাগত লালাভ নিশানে জনতরঙ্গে রচিত নির্ণীত এক মৃত্যুছক।
এরও আগে পরে আরও কতো কলুষিত তির্যক বিভীষিকাময়
অপগ্নিহল্কা অমসৃণ পথে নিশানা খুঁজেছে
পৃথিবীর বাতাস ভুলিয়ে পরপার চিনিয়ে দিতে।
দুর্গন্ধে ঠাসা এমন অপযজ্ঞের মাত্রাহীন অপযোগে
বিভ্রান্ত উন্মাদ ওরা উন্মত্ত ওদের নীতির রোষানল।
বেওয়ারিশ গলিত লাশের মতো করে দিতে
উদ্যত ওদের কলহে শীর্ণে জীর্ণে উদ্বাস্তু বাকি সব,
আর ওরা যেন তামাম রাজ্যের অধিপতি-
আগে পরে সর্বশেষেও থেকে যাবে নিশ্চিত যেন-
গণতন্ত্রের ঠোঁটে জড় ওদের ভোঁতা কসরত।
ওরা গিলে খেতে চায় দিনান্তে ক্ষুধার্ত শিশুর মুখে তোলা-
আবদারের জড়সড় গ্রাসে জড়ানো অন্নের থালা।
জাতীয়তার নামে চালিত করে ওরা স্টিমরোলার,
হরণে অগ্রজে মরণের তীব্র নোনা ঘূর্ণনে-
পিষ্ট করে ওরা যা আছে জাগ্রত-
সব ইতিহাসের পাতায় ছবিতে-অক্ষরে বোনা।
পরাজয়ের ভিটেবসতবাড়িতে এঁকে নতমুখ-
পেছনে হটে প্রশ্নের স্লোগান তুলে,
বলে ধরণেই সব ভুল ওদের তবে কীভাবে শেখানো যায়-
সময়ের পাঁচফোড়নে নির্নিমেষে চোখে সর্ষে ফুল,
স্ফুলিঙ্গে জড়ায় উত্তেজে ওদের মনের মগজ স্থূল।
বিনাদোষে আর আঘাত করতে এসো না; করো না কোনদিন।
অনিশ্চিত গন্তব্যে ঘোলাটে আজ তোমাদের আকাশ-
তোমরা হিসেবের গড়মিলে ম্লান মলিন।
তোমরা সৃষ্টির ললাটে কালো দাগ দিতে আজ অপরিপক্ক,
কার্যত অসহায়; দুঃসময়ে রোপণ করেছো আরও যতোসব ব্যর্থতা।
কেন অধিষ্ঠিত নও জননয়নে বুঝে নাও-
দৃশ্যত পরাজিত সংকীর্ণ বিভক্ত অর্থহীন।
বাংলার রাণী, তোমাকে ওরা বারবার মেরে ফেলতে চেয়েছিল!
আজ সবাই চেয়ে দেখে ওরাই ওদেরকে মারে,
অনাচারী নৃত্যে করে ভুল বলে উঠোনটাই দায়ী!
তোমাকে মেরে ফেলতে চেয়েও না পেরে ওরা শঙ্কিত ভীষণ।
কাঁপানো শীতে ওরা ঘামে কেন এটাই প্রশ্ন এখন।