ভাবনা আজব
                     পূরব ব্যানার্জী


যদি কোনো দিন হটাৎ করে       স্বপ্ন ভেঙে শয্যা প'রে
             আবার দেখি আমি কিশোর বেশে -


যা ঘটেছে এত দিনে        মিথ্যে সবই ঘোর স্বপনে
              চমকে বুঝি ছিলাম ঘুমের দেশে।।


অবাক হয়ে জানালা খুলে,         কুয়াশা ভরা মিস্টি সকালে,
               কিছু ব্যাথা  কিছু খুশির সাথে।


থমকে আমি অলস পায়ে     পুকুর পাড়ে খালি গায়ে
               নিমগাছের দাঁতন নিয়ে হাতে।।


লালচে মেঘের ঘনঘটা        সূর্যি মামার আলোর ছটা
                  ঝলক দেয় আমবনের ওই মাথে।


মনমোহিনী বাতাস বহে     বেলি চামেলির গন্ধ নিয়ে
                   প্রজাপতি নাচে অলির সাথে।।


গাছগাছালির গ্রামে যেথায়         মা বোনের স্নেহের ছোঁয়ায়
          সবার মুখে আপনকরা হাসি !


সকাল সকাল গরু ছাগল      বাগিয়ে নিয়ে বালক রাখাল
        আপন মনে বাজায় সুখে বাঁশি।


লাঙ্গল কাঁধে  বিশুখুড়ো     হাঁকিয়ে জোতের বলদ জোড়া
          বিড়ির ধোঁয়া উড়িয়ে মাঠের তরে -


হাঁসগুলি সব একসুরেতে      রাতের আঁধার কাটিয়ে পথে
               গান ধরেছে পদ্মদিঘীর পাড়ে।।


তালের সারি দিঘী জুড়ে      এক কোনে  বাঁশ বনের ভীড়ে
          বামুনঠাকুর স্নান করে মন্ত্র গেয়ে।
যেথায় বসে মঞ্জুমাসি        ভর্তি ঝুড়ি বাসন বাসি
             মাজে ঘষে ছাই আর মাটি দিয়ে।।


কাদাজলের রাস্তা বেয়ে      ধুতির কাছা গুটিয়ে নিয়ে
               লম্বা ছাতা বগললচাপা করে,


আপন মনে বিড়বিড়িয়ে        গোমড়া মুখে বুক শুকিয়ে
           স্যার চলেছেন বিদ্যালয়ের তরে।।


তপন বকুল গামছা পড়ে       তেল চুবিয়ে সেনান সেরে
             ফিরছে ঘরে শালুক খেতে খেতে।


ধুৎতারিকে বুকের জ্বালায়    দেখছি এসব নিজ ভাবনায় -
            প্রান কাঁদে হায় অতিত ফিরে পেতে।।