চাই একটা যুদ্ধ
                        পূরব ব্যানার্জী


একটা যুদ্ধ চাই, একটা বিশ্বযুদ্ধ !
বিস্ফোরণের পর বিস্ফোরণ, দেশজুড়ে উত্তাল  -
চারিদিকে কান্না, অনাহার আর বিধ্বংসী চেহারা !
মানুষের মাংসের পোড়া গন্ধ মেশানো ধোঁয়াময় বাতাস -
চতুর্দিকে শুধু শেয়াল আর হায়েনার, মৃত দেহাংশ
নিয়ে টানাটানির বীভৎস রূপ, তবু -
একটা যুদ্ধ চাই, আমি কিন্তু প্রকৃত দেশপ্রেমী।।


প্রতিদিন শত শত অসহায় সরল মুখ কত !
লড়াই করে দু টুকরো রুটির অম্বেশনে -
মৃত মায়ের দেহ সৎকার করে কেউ, রাত্রে সবার অগোচরে
খরকুটো, বা জ্বালানী ভিক্ষে করে।
প্রানপ্রিয় সন্তান ! সেও বেচে দেয় মাতা-
বুকে পাথর দিয়ে চাপা, কেবলই দুমুঠো অন্নের সন্ধানে -
যুবতি নারি অযতনে করে আপন মাংসের কারবার
অজস্র জ্বালা আর যন্ত্রনা সহ্য করে,
শুধু বেঁচে থাকার বাধ্য-বাধকতা নিয়ে,
আমি ভাবিনি  তাদের কথা -
দেশপ্রেমে অন্ধ আমি, বুঝিনা তাদের ব্যথা  ,
আমি চাই যুদ্ধ একটা সারাবিশ্বময় -
আমি যে আদর্শ দেশপ্রেমী।।


সাম্রাজ্যবাদীদের চলে প্রতিযোগিতা বিশ্বজুড়ে  -
পারমানু অস্ত্রের চলে চোরা-কারবার,
যুদ্ধের দামামায় বুক কাঁপে সৈনিকের প্রিয়তমার,
রাজনীতি জাঁতাকলে পড়ে মরে অগনিত যোদ্ধা
সীনান্তের এপারে-ওপারে ।।
আমি প্রাচীরের আড়ালে থেকে দেশপ্রেম নিয়ে
তর্কের লড়াইয়ে, তৈরি করি শত শত -
দেশদ্রোহী বেঈমান আর কাফের।
যুদ্ধের ব্যবসায়ীর অট্টনাদে,
আমি দেখি স্বাধীনতার সংগ্রামীর মেকী হুংকার ।
আমি চাই যুদ্ধ ! ভয়ানক বিধ্বংসী যুদ্ধ ।।


যুদ্ধের ময়দানের ছবি আমি দেখিনি  -
সংবাদে, পর্দায় দেখে আমি এঁকেছি তার ছবি,
লিখেছি রক্তপাতের অজস্র কবিতা  -
জানি মোর আপনার কেউ আসবেনা হয়ে বন্দি-
কফিনে , যুদ্ধের মাঠ হতে পুষ্প-শোভীত হয়ে
সহযোদ্ধার কাঁধে  -
জানি কোনো শিশু দেবেনা মুখাগ্নি তার পিতার
শ্মশানের জ্বলন্ত চিতায় অশ্রুর সাথে -
সন্তানহারা মায়ের প্রলাপ  আমাকে করেনা বিচলিত,
যুদ্ধের দামামা মোর কাছে এর চেয়ে বেশি প্রিয়,
আমি যে আদর্শ দেশপ্রেমী,
আমি চাই একটা যুদ্ধের মতো যুদ্ধ ।।