বাঙালী নিজেকে আজ বাঙালী বলতে
ভীষণ লজ্জা করে !
লজ্জা করে ভীষণ ।
ভাবতে অবাক লাগে -
সালাম,বরকত-আকবরদের মত ;
কতশত প্রাণ শহীদ হয়েছিল ,
এই বাংলা ভাষার জন্য ।
এই বাংলা ভাষার জন্যই আজ ;
অমর একুশে ফেব্রুয়ারী ।
পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ-আসাম-ত্রিপুরা ;
পৃথিবীর যে কোনো দেশে আজ ,
বাঙালির পদচারণা ।
মেকি ছদ্মবেশীগন
নিজেদের বাঙালী বলে জাহির করে ।
বাংলা ভাষাকে মাতৃদুগ্ধের সঙ্গে তুলনা করে ।
তোমরা বুকে হাত রেখে -
পিতা-মাতা অথবা ইশ্বরের নামে ;
শপথ নিয়ে বলতে পারো ?
তোমরা কেউ একটানা-
নির্ভেজাল বাংলায় ;
কথা বলতে পারো !
গুরুচন্ডালী আজ আমাদের
অস্তি মজ্জায় ।
বাংলা -হিন্দী-ইংরেজী মিশিয়ে ;
খিচুড়ি ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত।
বাংলা সাহিত্যে -
সে কবিতা হোক কিম্বা উপন্যাস ;
প্রবন্ধ হোক অথবা ছোট গল্প ,
এমনকি রম্যরচনাতেও-
বিদেশী শব্দ ভাণ্ডারের অবাধ বিচরণ
একটু বলনা সত্যি করে -
বাংলার আকাশ কি অন্ধকার মেঘে ঢাকা
এখন কি গোধুলীবেলা পুব আকাশে
রামধনু দেখা যায় না !
এখন কি বাংলার আকাশে বাতাসে
সোনিলী ধানের গন্ধ ভেসে আসে না?
না কি কীটনিশক আর বিষ
ছড়িয়ে আছে সর্বত্র !
ক্ষুদিরাম-নেতাজী-স্মামীজি আমার রক্ত ।
রবীন্দ্র-নজরুল আমার সুর আমার গান ।
অবরীন্দ্রনাথ-যামিনি রায় আমার মুখ আমার ছবি।
আমরা যে মহাসমারোহে
যে আড়ম্বড়ে পহেলা জানুয়ারীতে মাতি ।
আমরা কতজন বাঙালী
পহেলা বৈশাখে
কত প্রিয়জনকে
বাংলায় লিখি-আমি তোমাকে ভালবাসি ।
স্মরণ করে বলতে পারো
কাকে কবে 'রুপসী' বাংলা কিনে দিয়েছ ;
'মৌরিফুল' 'আরণ্যক' দিয়েছ উপহার ?
মাথা চুলকে চুলকে
চুল যাবে ছিড়ে
তবু শুধু হ্যারিপটার আর
পাবলু নেরুদা ঘুরপাক খাবে ।
ফি বছর বিভিন্ন চ্যানেলে পত্রিকায় ;
যারা সেরা বাঙালীর পুরষ্কার পায় ;
তাদের বর্তমান ঠিকানা
বিদেশে-আমেরিকা-ইংল্যাণ্ড-জার্মানী ।
স্বদেশে-মুম্বাই,ব্যাঙ্গালুরুতে,
বাংলায় নয় ।
নিজেকে বাঙালী বলতে
সত্যি সত্যিই ভীষণ লজ্জা করে ,
লজ্জা করে ভীষণ ।