ঘুরতে এলো বনে
সখের বসে,
দেখলো সুশ্রী কুমার
আছে বনবাসে,
মনেতে বাধল প্রেম
মায়ার বাঁধন,
রাখবে কি সে মোরে-
করে আপনজন?


লাজ-শরম ভুলে গিয়ে
কাছেতে এলো,
করতে চাই বিয়ে তোমায়
যতই হও কালো।
রামচন্দ্র প্রস্তাব শুনে-
অট্টহেসে মরে,
তাড়াতাড়ি পালাও তুমি
বউ আছে ঘরে।


ব্যথিত হৃদয় তার
কেঁদে উঠলো,
প্রেম কেন জাগে মনে?
অন্তর ডুবলো।
আমার নেই কিছু কম
যদি জানত,
বউ এর কারণে মোরে
ফিরায় না দিত।


পুনরায় চোখ মেলে-
দেখে যুবতী,
আছে তো আরেক পুরুষ
একই যার দ্যুতি।
আবার জানায় তারে
মনের আকুতি,
তুমি তবে নেও কাছে
করে সারথি।


লক্ষণ হেসে বলে,
এত সস্তা আমি!
দাদা দিল ফিরায়ে
আমি হলাম স্বামী।
দাদা-বউদির সেবক হয়ে
বনবাসে আছি,
হতে কি পারবে তুমি-
কুটিরের দাসী?


রমণী ঘুরে দাঁড়ায়,
পায় না তো ভয়।
আমিও রাজকন্যা,
লঙ্কেশ মোর ভাই।
বনবাসের ইতি টেনে
পাবে নতুন রাজ্য,
সবকিছুই হবে তোমার
যা কিছু ন্যায্য।


লক্ষণ দেখায় শান্ত
আসলে তো রাগী,
ঘরের সুন্দর বউ ফেলে
হয়েছে ত্যাগী,
রাজ্য লোভে কেন সে-
হবে বিবাগী?
নারীর প্রতি মায়া তবু
মনেতে জাগি,
নরম সুরে বলে তাই
শোন, হে মেয়ে,
যদি শুধু দাসী হও
করবো বিয়ে,
এ ছাড়া কাজ নেই
মোর খেয়ে-দেয়ে।


এবার সূর্পনখা-
দ্বিধায় পড়ে,
কোন দিকে যাবে সে-
কাকে দেবে ছেড়ে?
বিয়েতে সে অটল থাকে
রাজ্য চিন্তা ঝেড়ে,
সুযোগ বুঝে কামড় দেবে
হয়ে নেকড়ে।


রামচন্দ্রের কাছে লক্ষ্মণ
করে বাচ্য,
বউ আমার মানুষ নয়-
সুন্দরী বাহ্য,
আসলে তো সে এক-
রাক্ষসী কদর্য।


রামচন্দ্র উত্তর দেয়
হয়ে সহাস্য,
তুমি আমার প্রাণের ভাই
হারায়ও না ধৈর্য্য,
তোমার জন্য রক্ষা পেল
লঙ্কা রাজ্য,
সীতা দেবী বেঁচে গেল
হতে বিভাজ্য।।