শরতের শেষে আমাদের দেশে এসেছে "হেমন্ত"
রতন ভূষণ তার কুয়াশার আবরণে করে আবৃত।
তারি আগমনে বঙ্গ প্রকৃতি হয়েছে সজীব সুন্দর উজ্জ্বল
চরাচর প্রান্তরে ফসলের ক্ষেত্র প্রাতের রোদে শিশির ঝলমল।


পাকা ধানের সোনালী আভা রুপের বাহারে মনোহর কত,
কৃষক কাটে ধান আনন্দে নাচে প্রাণ ক্লান্তিবিহীন প্রশান্ত।
কৃষাণী উঠানের প্রান্তে ধান মাড়াই এর "খোলায়"
হেমন্তের উত্তরীী হাওয়ায় কুলায় ধান উড়ায়।


খুশিতে ঢল ঢল গাঁয়ের নরনারী ফসল চয়নে যতনে,
ঘরে ঘরে উৎসুক সবেই নবান্নর উৎসব আয়োজনে।
গৃহস্তের গোলায় উঠবে খেতের ধান কিছু কালের মত,
অন্ন সংস্থান স্বস্তি খানিক ঘরে খোরাকী মজুত।


হেমন্তে বিচিত্র ঐশ্বর্যময় সৌন্দর্যে তাই বাঙালিরা,
পল্লীর মোহময় টানে মিঠে রোদের আহ্বানে আত্মহারা।
তাই শহরে প্রবাসে যেথায়ই করে বাস
জন্মভূমির সকল ঋতুই তাদের প্রাণে আনে পল্লীর উচ্ছাস।


আমাদের দেশে ছয়টি ঋতু আসে মঙ্গল অমঙ্গলে,
ভাঙ্গা গড়ায় তারা মিশে আছে মৃত্তিকা, মানুষের হৃদয় তলে।
হেমন্ত ঋতু বহুল ধানের মৌসুম বলেই সতত
কৃষ্টির মহিমায় অমৃত স্বাদে তাকে ভালো লাগে এত।


বুঝি মাটির টানে অন্নের ঘ্রাণে ছুটে আসে ভিটায়,
অল্প সল্প সময় কাল কাটাতে হেথায়।
আজি সেজেছে প্রকৃতি সুন্দর বিপুল সম্ভোগ সমাহারে
সোনা রোদের সামিয়ানা তলে নবোঢ়া অপরুপ কাঞ্চন অলংকারে।


হেমন্তের সুখাবেশে আবাল বৃদ্ধ বর্ণিতা সকলেই তায়,
যেন মায়ের কোলের ওম আরাম নরম রোদে পায়।
তাই হেমন্ত ঋতু এত মনোরম এত উত্তম প্রাণবন্ত
বঙ্গের অঙ্গনে আনন্দ বন্ধনে যেন বিস্মৃতিরে করে জীবন্ত!