তোমার সাথে আমার নেই কোনো কথা, নেই দেখা, নেই কোনো সম্পর্ক—
তবু বুকের গহন ভিতরজুড়ে জমে থাকে এক অচেনা মায়া,
এক নিঃশব্দ প্রেমের শিকল,
যা টেনে নেয় প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি রাত।
জানি, তুমি জানো না—
জানো না, প্রতিদিন নীরব ঠোঁটের কোণ থেকে
একটুকরো প্রার্থনা উড়ে যায় নিভৃতে তোমার আকাশে—
যেন কোনো অলক্ষ্য পাখি, যে ডানা মেলে কেবল তোমার মঙ্গলের দিকে।
জানো না, আমি কেমন করে চাই—
তুমি ভালো থাকো, হাসো,
বৃষ্টির দিনে কাঁচের জানালায় জলছাপ ফেলতে ফেলতে
চায়ের কাপে ঠোঁট ছুঁইয়ে পাশে বসুক
কারো কোমল সাহচর্য—হয়তো আমার মতো কেউ,
হয়তো এক অনুরাগী ছায়া।
ঝরো বৃষ্টির মতোই ঝরে পড়ে স্মৃতির গুচ্ছ—
যেখানে তুমি ছিলে এক নীরব বসন্ত,
আমি ছিলাম এক পেছনে ফেলে আসা কবিতা,
আর মাঝখানে ছিল না বলা হাজার বাক্য—
যারা আজ রাতের নিস্তব্ধতায় ঘুম কেড়ে নেয়,
বালিশ ভিজিয়ে ফেলে নিঃশব্দে—
অথচ কেউ জানে না।
জীবন এখন পরিণতির খাতা—
স্বপ্ন, সংসার আর ভবিষ্যতের যান্ত্রিক দৌড়ঝাঁপে ভরা।
তার ফাঁকে ফাঁকে তুমি ছিলে এককালের রৌদ্রছায়া—
আজ নেই,
তবু রয়ে গেছো এক অলৌকিক ছায়ার মতো,
যা আমি পারি না অতিক্রম করতে,
পারি না ভুলে যেতে কোনোদিন।
কিছু কিছু দূরত্ব থাকে শব্দহীন—
না কোনো কলহ, না কোনো অভিযোগ—
তবু হারিয়ে যায় মানুষ,
যে একসময় ছিল হৃদয়ের দিগন্ত,
আজ তাকেই ভাবতে গেলে কেঁপে ওঠে চোখের তারা,
শব্দ হারিয়ে যায়—
থেকে যায় শুধু নিঃশ্বাসের নিচে জমে থাকা একটি দীর্ঘশ্বাসের নীল নদী।