স্রোতের শেওলা ভেসে যায় নদীর জলে;
মেঘ কন্যা ছুটে চলে তার বাপের দেশে;
চাতক থাকে মেঘের আশে কখন আসবে বৃষ্টি?
খোপের কপোতী চেয়ে থাকে কপোতের আশায় কখন আসবে ফিরে দূর ঘন জঙ্গল হতে;
সবাই আশায় বাধে বুক!
শুধু আমার আশার গাছের ফুলগুলি শুকিয়ে ঝরে পড়েছে ধূলায়;
পিষ্ঠ হয় পায়ে তাই বলে কি ফুলগুলি এতই অনাদরে?
কোনো এক শ্রাবনের বাদল রাতে মনে পড়ে তোমায়;
মনের আকাশে অজর ধারা আর বিজলি চমকায়;
বর্জপাতের শব্দের মত ফেটে যাচ্ছে আমার হৃদপিন্ড!
তোমাকে মনে পড়ে পৌষের নবান্নের দিনে অথবা হেমন্তের শেষ বিকালে;
পায়বার তীরে নব যুবতির ছলকরা কিছু অনুক্ষনে;
নব কিশোরীর চকতি চাহনিতে;
নদীর কলকল তানে;
বনহংসীর মত কল্পনা করি তোমায়;
ভেসে আসছো তুমি আমার মনের খেয়ায়;
আজও নিশীথের অন্ধকারে শিশীরের টুপটুপ শব্দের মত হৃদয়ে পথ হাট তুমি;
তোমার বুকে মাথা রেখে গল্প করা সেই ক্ষনে
ঐ আকাশের একটি তারা ফুল হয়ে জড়ে পড়েছিল তোমার নোটন খোটায়;
কত আলিঙন কত সুধা ভরা ছিল সেই রাত!
মনে পরে কি প্রিয়া সেদিনের কথা?
যেদিন মোরা হিমালয় হতে নেমে পায়রার জলে টেউয়ের ফেনা হয়ে দুজন গিয়েছিলাম মহা সমুদ্রের দেশে;
মিতালী করেছি সেথা দুজন প্রেমের সুধা পান করে।
সেই তুমি আজ হারিয়েছ কোন মৃত্তিকার গর্ভে কিংবা চন্দ্র সূর্যের আড়ালে নাকি মহা সমুদ্রের অতল গর্ভে?
আকাশে বাতাসে চন্দ্রে সূর্যে হিমালয় হতে মহা সমুদ্রের অতল গর্ভে খুজেছি আমি;
কোথাও সারা নেই তোমার;
নিরব পৃথিবী নিরব গাছপালা তরুলতা;
খুজে খুজে আমি ক্লান্ত এক ব্যর্থ যুবক!
তুমি কেন আজ এত নিষ্ঠুর হলে?
সাড়া দেওনা কেন মোর ডাকে?
তোমার প্রেম আজ মরিচিকার মত ঘাস হয়ে মরে ;
কোথায় গেল তোমার সেই মিষ্টি কথার বানী?
কোথায় ঐ আকাশের চন্দ্র সূর্য সাক্ষী?
জানি সব কিছু হারিয়েছে আজ সময়ের অতল গর্ভে;
শুধু শূন্য হয়ে পড়ে আছে এই হৃদয় ধুঁধুঁ বালুর চরের মত।
জানি আসবেনা ফিরে আর কোনদিন আমার এই অনল কাষ্ঠ হৃদয়ে;
হাটবে না আর কোনদিন এই মরুময় ক্লান্ত পথে;
তাইতো এখন আর ফিরে তাকাই না দূর সমুদ্রের অথৈ নোনা জলে;
অপেক্ষা করি না আর ঐ পায়রার তীরে;
ভুলে গেছি আমি তোমার দেওয়া সকল ব্যাথা!
ভূলে গেছি প্রিয়া আজ আমি তোর কথা!