খবর রটে গেলে তার বিয়ের
সমস্ত গ্রামের অলি কলি, পথ ঘাট পর্যন্ত
জানে
সে সব অপবাদ ধুলোয় মিটিয়ে দিচ্ছি এবার ৷
বিলের ফুল, কোণের কুল গাছ অথবা তার সই
দোলনাও খুশি,
হয়ত বাপ না থাকেরে যন্ত্রণা এবার তাকে  মুক্তি  দিবে ৷


পড়শী অশীতিপর দাদির হেংলা কথা গুলো
তাকে মুচড়ে দিতো,
কাউকে কিছু কইবার পর্যন্ত পারতো না ৷
বাপ না থাকনের তীব্র জ্বালায়
ভেতরে ভেতরে জ্বলে নিঃশেষ হতো ৷


শোকে পাথর তার  জননীর
খুশি কিনা জানি না,
তবে তনয়ার ঘন দীঘল কেশে শেষ বার নারিকেল তেল দেওনের সময় দেখেছিলাম -
তার কয়েক ফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়ছে ৷  


কেউ কেউ মেহেদি তুলছে গীতের সুরে
কেউ আবার মেহমানের তালাশে ব্যস্ত
শুধু সে একা, চৌদিকে চোখ ফেললে
দেখা যায় তার বিয়ের আয়োজন ৷
এবার তাকে  যেতে হবে -
শিউলির তল , পুকুর ঘাটের শীতলতা ছেড়ে
অথবা তাকে ভুলে যেতে হবে
দ্বিপ্রহর, আমলকীর ছায়া; ঘরের কোণের চড়ুইও
তাকে  ভুলে যেতে হবে ৷
এটাই নিয়ম ৷


সেদিন ভোরের সূর্য প্রখরতায় ,
শীতের শেষ ঝিরে ঝিরে হাওয়ায়,
গণকণ্ঠে শেষ রব, সে নেই আর!
মেহেদি রঙ না মুছতেই সে মুছে গেছে ৷
বিয়ের উৎসবের সুগন্ধি মেখে তাকে সাজালো
শেষ সাজন ৷
সমস্ত অভিযোগ হতে মুক্তি পেল পিতৃহীন তনয়া ৷