(কবি শামসুর রাহমানের পূণ্য স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত)


কবি
তুমি নীরব কেন?
কেন তোমার কলম আজ বন্ধ?


বন্দী শিবির থেকে উৎসারিত
তোমার প্রতিবাদের পংক্তিমালা আজ বড়ই প্রয়োজন এখানে!
তুমি নেই তাই প্রতিবাদের ভাষাগুলোও হারিয়ে গেছে আজ।
যাদুঘরে আশ্রয় নিয়েছে ওরা।
কে করবে প্রতিবাদ? কোথায় সেই মজলুম আদিব?


একদিন তোমার কলম হাতিয়ারের মতই গর্জে উঠেছিল জালিমের বিরুদ্ধে।
কথা বলেছিল ‘মজলুম আদিব’ হয়ে।
প্রেম আর দ্রোহে একাকার হয়ে গিয়েছিল তোমার কলম।
হঠাৎ হারিয়ে গেলে তুমি- বড় অসময়ে তোমার এই প্রস্থান!
অথচ আজ বড়ই প্রয়োজন তোমার।


তোমার কলম বাংলাদেশকে স্বপ্ন দ্যাখাত
শূন্যতায় আনত আলোর ঝলকানি।
উদ্ভট উটের পিঠে চলা স্বদেশকে-
ঊষর মরু’র বুক থেকে
উর্বর পলিমাটির সমতলভূমিতে এনেছিলে তুমি।
অন্ধকার থেকে আলোয় এনেছিলে প্রিয় স্বদেশকে।
দ্বিতীয় মৃত্যুর আগেই গেয়েছিলে প্রথম গান।
বিধ্বস্ত নিলীমায় সৌন্দর্যকে এনেছিলে তোমার ঘরে।
গোরস্থানে কোকিলের আহবান শুনেছিলে তুমি
তাই বুঝি তুমি শূন্যতায় ডেকেছিলে শোকসভা!
ভস্মস্তুপে দেখেছিলে গোলাপের হাসি
আর শুনেছিলে তার হৃদয়ের ধ্বনি!
হেমন্ত সন্ধ্যায় কিছুকাল উজাড় বাগানে কাটিয়ে
অবেলায় কার দেখা পেয়েছিলে তুমি?


অদ্ভুত আঁধার এক ঘিরে আছে চারপাশে
ঐ শুনতে কি পাও নগ্ন পদধ্বনি?
তুমি চুপ করে থেকো না কবি- আবার ‘মজলুম আদিব’ হয়ে ফিরে এসো তুমি।।