যখন যেমন মনে করি
          তাই হতে পাই যদি
আমি তবে একখানি হই
          ইচ্ছামতী নদী ।
রইবে আমার দখিন ধারে
          সূর্য ওঠার পার ,
বাঁয়ের ধারে সন্ধেবেলায়
          নামবে অন্ধকার ।
আমি কইব মনের কথা
          দুই পারেরই সাথে ,
আধেক কথা দিনের বেলায় ,
          আধেক কথা রাতে ।
  
  
যখন ঘুরে ঘুরে বেড়াই
          আপন গাঁয়ের ঘাটে
ঠিক তখনি গান গেয়ে যাই
          দূরের মাঠে মাঠে ।
গাঁয়ের মানুষ চিনি , যারা
          নাইতে আসে জলে ,
গোরু মহিষ নিয়ে যারা
          সাঁতরে ওপার চলে ।
দূরের মানুষ যারা তাদের
           নতুনতরো বেশ ,
নাম জানি নে , গ্রাম জানি নে
          অদ্ভুতের একশেষ ।
  
  
জলের উপর ঝলোমলো
          টুকরো আলোর রাশি ।
ঢেউয়ে ঢেউয়ে পরীর নাচন ,
          হাততালি আর হাসি ।
নিচের তলায় তলিয়ে যেথায়
          গেছে ঘাটের ধাপ
সেইখানেতে কারা সবাই
          রয়েছে চুপচাপ ।
কোণে কোণে আপন মনে
          করছে তারা কী কে ।
আমারই ভয় করবে কেমন
          তাকাতে সেই দিকে ।
  
  
গাঁয়ের লোকে চিনবে আমার
          কেবল একটুখানি ।
বাকি কোথায় হারিয়ে যাবে
          আমিই সে কি জানি ?
একধারেতে মাঠে ঘাটে
          সবুজ বরন শুধু ,
আর - এক ধারে বালুর চরে
           রৌদ্র করে ধূ   ধূ ।
দিনের বেলায় যাওয়া আসা ,
          রাত্তিরে থম্   থম্ !
ডাঙার পানে চেয়ে চেয়ে
          করবে গা ছম্ ছম্ ।


(শিশু ভোলানাথ কাব্যগ্রন্থ)