ভৃত্যের না পাই দেখা প্রাতে ।
দুয়ার রয়েছে খোলা ,                স্নানজল নাই তোলা ,
           মূর্খাধম আসে নাই রাতে ।
মোর ধৌত বস্ত্রখানি              কোথা আছে নাহি জানি ,
            কোথা আহারের আয়োজন !
বাজিয়া যেতেছে ঘড়ি            বসে আছি রাগ করি —
             দেখা পেলে করিব শাসন ।
বেলা হলে অবশেষে              প্রণাম করিল এসে ,
              দাঁড়াইল করি করজোড় ।
আমি তারে রোষভরে           কহিলাম , “ দূর হ রে ,
               দেখিতে চাহি নে মুখ তোর । ”
শুনিয়া মূঢ়ের মতো                ক্ষণকাল বাক্যহত
                মুখে মোর রহিল সে চেয়ে —
কহিল গদ্‌গদস্বরে ,                 “ কালি রাত্রি দ্বিপ্রহরে
               মারা গেছে মোর ছোটো মেয়ে । ”
এত কহি ত্বরা করি                গামোছাটি কাঁধে ধরি
               নিত্যকাজে গেল সে একাকী ।
প্রতি দিবসের মতো                ঘষা মাজা মোছা কত ,
               কোনো কর্ম রহিল না বাকি ।


  (চৈতালি কাব্যগ্রন্থ)