দুনিয়া জুড়িয়া নিত্য চলিছে অযুত নিযুত খেলা
খেলিতে খেলাতে যাচ্ছে কেটে অনন্ত অপার বেলা।
মনে পড়ে আজি শৈশবে যখন খেলিতাম দিনমান
স্নেহময়ী মাতাও বকিতেন কষে করিয়া অভিমান।
সারাদিন শুধু খেলা আর খেলা, কী হবে এত খেলে?
ভেঙ্গে সারা করো সকল খেলা ভানু অস্ত গেলে।
কী লাভ গড়িয়া পাতার কুটির, পুতুলের দিয়ে শাদি  
বালুর চরে প্রাসাদ তুলিয়া, খেলিয়া চড়ুইভাতি!
মিছেমিছি এ খেলার বলো কিবা রহিয়াছে মানে?
কখন এসব কী কাজে লাগিবে বিধাতাই শুধু জানে!


এর চেয়ে ভালো এসব ফেলিয়া অধ্যয়নে দেহ মন
জীবনে তাহা সুদিন আনিবে, দানিবে অবার ধন।
সম্মান করো, মাস্টার্স পড়ো, আর ধরো ডক্টরেট
কদর বাড়িবে, আদর কাড়িবে ভরিবে শুন্যপেট।
ব্যাংকার হলে বাংকার খুলে রাখিবে জমিয়ে টাকা
ক্যাডার হলে সুখের রাডারে সুনামে হবে থাকা।
প্রাসাদোপম আবাস গড়ে রহিবে আরাম আয়েশে
কেউ হবে না বাঁধা তোমার মনের কোন খায়েশে।


এ আজগুবি শুনিয়া হেরিয়া ভাবে শিশু মনে মনে
খেলার ধরন ভিন্ন কি হয় বয়সভেদে জনে জনে?
সাদা পাতা আর সার্টিফিকেটে বলো কী আছে তফাত
সকলি তুচ্ছ বিদ্বান যদি বরিয়া নেয় হঠাৎ ওফাত।
আছে কি এমন পন্ডিত যিনি ধরার কোন শালিশে
অমর বলিয়া রায় দিয়া দিবে ব্যাংকারে বা পুলিশে?
ক্ষুদ্র জীবনের সীমা যদি কেহ দৈবাৎ যায় পেরিয়ে
ইমারতও হয় জরাজীর্ণ, আগাছা শ্যাওলা জড়িয়ে।


হায়! সবই একদা ভাঙ্গিয়া পড়ে বালির বাঁধের মতো
তবু সুখের হল্লায় পাল্লায় নামে মানুষ আছে যতো।
ক্ষমতা সম্মান সবি মিশে যায় মাটির ধুলার সাথে
তবু জাগিয়া দিবানিশি তারা স্বপ্নের মালা গাঁথে।
গড়িয়া ভেঙ্গে ফেলিলেই যদি এর নাম খেলা হয়
তবে এ দুনিয়ার সকল কর্মই খেলা বৈ কিছু নয়।
কেউ খেলে শিশুকালে আর কেউ খেলে বড়বেলা
আদতে সকলি সমান অযথা, সকলি শুধু খেলা।