স্ত্রীর গহন অন্তর তরে, নিরন্তর মিনতি করে
কহিলাম আশা ভরে, নিয়ে মরণব্যাধি করোনা।
ওগো মোর আজন্ম প্রিয়ে, অনাবিল অনুরাগ নিয়ে
এ শেষবেলায় একবার বুকে জড়িয়ে ধরো না।


যেন নয়নে দেখেছে নাগ, যেন শয়নে লেগেছে আগ
কহিল, আহা এখানে কেন? ভাগাড়ে গিয়ে মরো না!
দিলাম কালেমার দোহাই, তুমি মোরে দাও রেহাই
হায়! এখনো দাঁড়িয়ে কেন? জলদি দূরে সরো না।


মেখে অবারিত আহ্লাদ মুখে, বেঁধে পরম আশা বুকে
আপন আত্মজে ডেকে কহি, কর বাবা এতটুকু করুণা।
ক্ষণিক বাঁচতে চাহে মন, তাই তোমায় শুধাই ধন
আমায় ত্বরিত চিকিৎসালয়ে নিয়ে যেতে পারো না?


যেন মাথায় পড়েছে বাজ, হেন মুখেতে আনিয়া ঝাঁঝ
কহিল যাদু মোর - আহা ছাড়ো না, মোরে ছাড়ো না।
তুমি বাবা মরে গেলে, হৃদয় যাবে বটে গলে
তাই বলে আমা হতে এমন কিছু চাইতে পারো না।


দয়ালু এক শিক্ষক সাক্ষাতে, বাড়াই হস্ত ধরিতে হাতে
আহা, কর কি! কর কি!! ধরো না মোরে ধরো না।
বিদ্যালয়ে ছিলে বেকুব, এখনো সেই কূপমণ্ডূক?
হাতে হাতে নহে, পায়ে পায়ে কেন মুসাবিদা করো না?


করিয়া পুনঃ গোমড়া বদন, ধরিয়া সশব্দে কড়া রোদন
এক মহান মৌলভী পানে অতঃপর দিলাম ধরনা।
শুনো শুনো বলি মহাশয়, অন্তর-জ্বালা নাহি সয়
মোরে আল্লাহর নামে একটু ঝাড়ফুঁক কেন করো না?


কথা শুনে মৌলভী সাবে, আকাশ-পাতাল কী যেন ভাবে!
হুঙ্কারি কহে, আপন তরণী আপনি কেন বাপু তরো না?
নিজে বাঁচলে বাপের নাম, যমে নিলে নাহি দাম
‘ইয়া নাফসি’ ‘ইয়া নাফসি’ মন্ত্র কেন মনে ধরো না?


সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
১৩/০৩/২০২০ খ্রি.