তুমি বরং সুখী হও, আমি থাকি নীরব আজ,
তোমার প্রভাতে ফুটুক ফুল, আমার যন্ত্রণায় সেজে সাজ।
তুমি নাও প্রেমের সংগীত, গেঁথে নাও এক নব নীড়,
আমার বুকে জ্বলুক ব্যথা, ভুলে যাও সে অধিকারহীন দীর্ণ পীড়।

তোমার অধরে উঠুক হাসি, গালে খেলুক রৌদ্ররেখা,
তোমার চোখে ফুটুক শ্রাবণ, জোছনায় ভাসুক শুভ-সন্ধে দেখা।
তুমি যারে চেনো আপন, তারই করো হৃদয় জয়,
আমি থাকি ছায়া হয়ে, নিভৃতে জাগি অন্তর্নিহিত ভয়।

যাকে ভালোবাসো তুমি, তারই হাতে দিও প্রাণ,
আমি কাঁপা কলমে লিখি শুধু, অশ্রুসিক্ত মনের গান।
ভালোবাসা নামে যে পাথর, ছিল বুকে সযতনে,
সে আজও ক্রন্দনে বাঁচে—তোমার স্মৃতিচিহ্ন গোপনে।

তোমার নামটি উচ্চারিত নয়, তবু দোলে ওষ্ঠ-কাঁপনে,
তোমার ছায়া ছুঁয়ে যায়, প্রতিরাত্রি জানালাপানে।
সেদিন তুমি গেলে চলে, রাখলে না একটুও দাগ,
আমার হৃদয় পুড়ে গেলো—তবু ভালোবাসায় ধরা লাগ।

জানো, তুমি সুখে থাকলে, আমি জিতি বিষণ্ন ব্যথা,
তুমি হাসো, সেই হাসিতে মিশে যায় আমার তপ্ত নিঃশ্বাসতা।
তুমি যারে খোঁজো হৃদয়ে, তার মাঝেও খুঁজি আমি,
তোমার নাম গেঁথে রাখি, আঁধারে জ্বলুক সেই অভিজ্ঞান-স্বামী।

তুমি ফিরো না, এ জানি ঠিক, তবু চাহি পথের পানে,
যদি কোনো এক দুর্যোগ-রাতে তুমি দাঁড়াও নির্জন জানে।
সেই স্বপ্নে, সেই আর্তিতে, গুনে গুনে কেটে যায় ক্ষণ,
তুমি না থাকলে ভালোবাসা—রহে শুধু একতরফা মন।

তোমার কাছে চাই না কিছু, শুধু একটাই প্রার্থনা রয়—
তুমি থাকো আনন্দে চিরকাল, তবু আমাতে থাকুক ক্ষয়।
তুমি বরং সুখী হও, রাঙা হোক তোমার সকালের আলো,
আমার জীবন নিঃশব্দ হোক—তোমার নামেই সে থাক স্মরণালো।