প্রতিটি বছর ঠিক এই সময়ে
আমাদের ছোট্ট সোনার গাঁয়ে,
অতিথী হয়ে তোমার পদার্পন;
এত বুঝি লাগে ভালো,মোদের করতে আলিঙ্গন?
সবুজ ঘাসের গালিচা পেতে পথে পথে,
কাঁচা সবুজ ধান গাছ গুলি মৃদু বাতাসে,
নাচিয়া যেন ধান ফুলের মালা হাতে
তোমায় করে বরন।
কুচকাওয়াজ পাখীদের, সঙখ বাজে গরু ছাগলের,
গাঁয়ের আবালবৃদ্ধবনিতা জানায় যে সাদর সম্ভাসন।
তুমি যেন ঠিক রাজার মত
কল কল শব্দ করে গালিচা মাড়িয়ে,
আস মন্থর গাম্ভীর্য লয়ে
আনাচেঁ কানাচেঁ ছড়িয়ে যায় তোমার সেনাসামন্ত।
জানি না কি হয় ভুল, রাগিয়া প্রতুল,
আমরা হয়ে যাই তোমার চক্ষুশূল।
পাখীরা সব ঘর বাড়ি ছেড়ে, শূন্যে উড়ে
ক্লান্ত অবশ হয়ে তোমার বুকে পড়ে মরে।
বুড়ো বাবা মা ছেলের কাঁধ ধরে
বউ স্বামীর হাত, মেয়েছেলে সকল
দুধের শিশুগুলি আঁকড়িয়ে মায়ের আঁচল;
খাবার খুঁজে অতি সংগোপনে,
ঘুরে ফিরে একটু আশ্রয়ের সন্ধানে,
বাঁচিতে চাহে হায়। বাড়ির ঘটিমটি আসবাব পত্র যত
তোমার সেনাসামন্ত করে চুরি,
আর হাঁস মুরগী গরু ছাগল ভেড়া
ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা ওদের, যায় গো মারা।
গাঁয়ের মোড়ল হয়েছে মাতাল,
বির বির করে কি যেন বলে বারবার;
অতিথী এল আর সারা গাঁয়ে হলো হাহাকার।
খাবার নাই, পানি নাই, ঠাই নাই;
ঐযে আকাশে উড়ছে শকুন আর চিল,
ভরে গেছে জন্তু ও মানুষের লাশে খালবিল।
জনতার চাপে মাতাল মোড়ল বলে-
হে অতিথীবর! কবে ফিরিবে গো তুমি ?
মুক্তি পাবে আমার এ সোনার গাঁ’ মাতৃভূমি।