ঠিক ঝরনার মতো স্নিগ্ধতার পরশ বুলিয়ে,  
ঐ সূতিয়া নদীটা চলে গেছে ঠিক তোমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে,
আর ঐ বাঁকটায় যেখানে
সবুজ, গাড় সবুজ রঙের দূর্বা ঘাসের গালিচার উপর বসে,
তোমার বাগানের ঐ লাল গোলাপটি হাতে নিয়ে প্রতীক্ষায় প্রহর গুনতে,
তখন আমার খুব ভালো লাগতো তোমাকে। তোমাকে ভালোবাসি। আজও ভালোবাসি।
তোমাদের ছনের ছাওয়া ছোট্ট মাটির ঘরগুলো দেখে, মনে হতো,
তাবু গেড়েছো, বেড়াতে এসেছো, থাকবে কয়েকদিন।
বেড়া নাই ঘরে ছাগলটা কেমন যেন করছে ভ্যেঁ ভ্যেঁ,
মনে হয় খুঁজছে তোমায়, দেখেনি যে অনেকক্ষন;
আর তোমাদের সাদা কালচে গাভীটার, ঐ হালকা খয়েরি রঙের বাছুর,
খুব হয়েছে চতুর। প্রথম দেখে নিবে, যদি কেউ নাই কাছে,
মিছি মিছি হাম্বা হাম্বা করে ডাকিবে তোমায়। ওর জানাই আছে আসবে তুমি,
রশি খুলে দেবে আর ও তার মা’র কাছে যাবে ; খাবে দুধ, ক্ষুধা পেয়েছে যে ওর।
ঐ যে বড় সড়কটা উত্তর থেকে দক্ষিন, তারপর একটু বেঁকে
একেবারে সোজা পশ্চিম দিকে গেছে, অতদূর যেতে হয়নি, ওর আরেকটু আগেই
বড় জাম গাছ ওর ঠিক পাশের গলিটা ধরে, দু’পাশে ধানক্ষেত,
মনে হলো উন্মুক্ত বিশাল মাঠ, সবুজের সমারোহ,
মুক্ত আকাশের নীচ দিয়ে আপন মনে ছুটছি আর ছুটছি তোমাকে দেখব বলে।
আমি যে ভালোবাসি তোমাকে। আজও ভালোবাসি।
সেই সরু পথ ধরে যেন মনে হয় নেচে নেচে চলি;
যেমন সুজলা সুফলা ফসল বৃক্ষরাজি
বাতাসেতে নাচতে নাচতে আমার গায়ের উপর পড়ছে ডলি।
লাঙ্গলের খুটি ধরিয়া কৃষক গাহিছে গান; রাখালের বাঁশীর সুর আর পাখীর কলতান,
মনেতে জাগিয়া উঠে আশ্চর্য শিহরন। কেমন জানি এক আলোড়ন।
সেই শীতের সকালে যে শিশির চুমো খায় তোমার চুলে, গালে আর ঠোঁটে
সুরুজের আলোতে যখন ধরার আধার শুরু করে পালাতে, তখন কি মনে হয় জানো ?
যেন এক অস্পরা হয়ে গেছো তুমি। সোনালী কাঁপড় আর রাজ্যের
সোনার গয়নাগাটি পরে সেজেছ। তখন তোমাকে খুব ভালো লাগে।
তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আজও ভালোবাসি।