‘ছাদ’ আকারে তিল,  ভেতরে তরঙ্গ


তিলে তৈল থাকে। বাল্যবেলায়  জেনেছিলাম। ধীরে ধীরে জানলাম তিলে তরঙ্গও থাকে। আর এ তরঙ্গ খুবই শক্তিশালী । মনে পড়ে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহোদয়ের ‘তৈল’ এর কথা? আজকের বাস্তবতায় এর কার্যকারিতা যে কত বেশি তা কি আর বলতে হয়! যাক, তেল নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য বাদ রেখে এবার শক্তিমান কবি সমীর প্রামাণিক(অন্বরীষ কবি) এর ছাদে আসি । ‘ছাদ’ অনুকাব্যটি পড়ে মনে হল এটি আকারে তিল তুল্য হলেও ভেতরে তরঙ্গ আাছে।


“ আকাশটাকে ছাদ ভেবে নিলে তো আর, ঘরের অভাব দূর হয়ে যায় না!
তবে, তুমি-আমি এক ছাদের নিচে…/ ভাবতে বেশ লাগে!”


অতিপরিচিত সহজ সরল কথায় কবি অনুকবিতাটির জাল বুনেছেন। ছাদ সংক্রান্ত দুটো ভাবনা এ কবিতার মূল ক্রীড়নক । এরা পরস্পর বিরোধীও বটে। কবির কথার বিস্তার ঘটালে দেখা য়ায়, মাথার উপর থাকা বিশাল আকাশকে ছাদ ভাবলে ঘরের অভাব মোটেও মেটে না। এ এক ধরণের সান্ত্বনা, যার মাঝে লুকিয়ে থাকে বিরাট কষ্ট আর বঞ্চনা। কিন্তু সে ভাবনাটাই যদি হয় ‘তুমি-আমি এক ছাদের নিচে’ তো  আকশের চাঁদ এসে হাতে ধরা দেয়। প্রেমাস্পদের সাহচর্য পাবার কল্পনায় ভাবুকমন ঐশ্বর্যবান হয়ে ওঠে। প্রেমিকমন মিলন তরঙ্গের তীব্র আশায় দোল খেতে থাকে । সে বলে ওঠে ‘আজ
পাশা খেলবরে শ্যাম’। এতে প্রেমিকমনের
প্রেমনিষ্টতার প্রতিফলন দেখা যায়। অগ্রজ কবি হেলাল হাফিজ পাঠে আমরা জেনেছি তিলে শুধু তরঙ্গই থাকে না এ্যাটমিক পাওয়ারও থাকে।‘ নিউটন বোমা বোঝ/ মানুষ বোঝ না!’


সুতরাং ‘ছাদ’ কবিতাটি আকারে তিল হলেও এতে তরঙ্গ প্রবল। প্রেমবোধে আচ্ছন্ন মিতবাক এ কবিতার জন্য কবিকে অভিনন্দন।