আমি ক্লাস এইটে পড়ি
আমার আছে অনেক সিক্রেট
বন্ধুরা সব পড়তেছে বই
আমি মাঠে খেলতেছি সেই ক্রিকেট।
আমার আছে অনেক ক্রেজি সিক্রেট।


সকাল সাতটায় মা বলেছে
গতকাল স্যারেরা ফোন করেছে
অঙ্ক-টঙ্ক কী করার আছে।
স্যারের বাসায় তো যাব না —
কিসের কী পড়া-পড়ি এতো প্রাইভেট!
বুঝতে দেবো না এটা— খুব সিক্রেট।


দুইশো টাকা   দিয়ে হাতে
বলেছে ছোটো করে চুল কাটতে
আমি দোকানে গিয়ে সাথে সাথে  
কোরিয়ান কাটিং দিয়েছি—
থাকতে তো হবে আমার সেই আপডেট।
এটাতো কেউ বুঝবে না —খুব সিক্রেট!


মেয়েদের দেখতে মন চায়
জানালার বাহিরে তাই চোখ যায়
ফিরাতে পারি না আমি নিরুপায়!
কী যেন আছে ওদের আঃ —
বুকের মধ্যি খানে  লাগে বুলেট
তবুও  ছটফট করি না— কী! সিক্রেট।


আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াই
বারেবার চুলগুলো নাড়াই চাড়াই
এদিক ওদিকে মুখ ঘুরাই ফিরাই
নিখুঁতভাবে দেখি বারবার —
ফিটিং হয়েছে কি-না জামা-প্যান্ট সেট।
স্টাইলটা হলো এখন  বড়ো সিক্রেট।


স্কুলে প্রায়ই   নিয়মিত যাই
কিন্তু পড়াশোনায় মোন টোন নাই
কেমন কেমন যেন লাগে রে ভাই
সিলেবাস সব বাদ রয়েছে—
এদিকে পরীক্ষার পড়ে গেছে ডেট।
মাকে কেউ বলো না—খুব সিক্রেট!


এইতো বলল  এই মাত্র
আমি নাকি খুবই ভালো ছাত্র
ঘুরি না ফিরি না যত্র-তত্র
ফালতুদের সাথে মিশি না—
আড্ডা ফাড্ডায় নাই কোনো ইন্টারেস্ট।
পূর্ণিমা এসব বলেছে— খুব সিক্রেট!  


ক্লাসের ক্যাপ্টেন ভারি মাদবর
বলে কী, ভালো করে দুই কান ধর!
এ কথার করবি না কোনো নড়চড়।
বাসায় যাবার পথে বুঝবি—
ঠ্যাং ভেঙ্গে দেবো তোর মেরেছিস থ্রেট।
আগে কিছু বলবো না—থাক সিক্রেট!


গতকাল ছিল দশটায় ক্লাস
ডাক দিয়ে বসালো বন্ধু পলাশ
গল্প জুড়ে দিল দোস্ত বিলাস।
শুনলাম কত কী যে কিচ্ছা —
ক্লাসে যেতে হলো দুই ঘন্টা লেট।
মাকে কেউ বলো না— খুব সিক্রেট!


আমার বন্ধু  রকি, তুহিনে
চিপায় ঢুকে কোনো কোনো দিনে
সবার আড়ালে অতি গোপনে
ফুকুৎ ফুকুৎ  বিড়ি খায়—
মাঝে মাঝে আবার  টানে সিগারেট।
এটা কিন্তু  ভাইসব— খুব সিক্রেট !


বন্ধু বুলেট চকলেট খায়
কাছাকাছি থাকলে ভাগ পাওয়া যায়
স্কুলের পিছে   সাড়ে বারোটায়
হঠাৎ পকেটে দিছি হাত—
বের হলো ভাঙা দুটি বিড়ির প্যাকেট।
কী আর বলতাম ভাই—খুব সিক্রেট!


আমার মন চায় বাবার মতোন
কিনে নিতে একটি মোবাইল ফোন
টিপাটিপি করবো যখন তখন
জেনে ফেলেছি পাসওয়ার্ড —
পাশের বাসাতে আছে ইন্টারনেট।
বলে দিও না ওদের — খুব সিক্রেট!


ছায়াছবিতে  গায় গান
শুনেই লাগে মনে প্রাণে  টান
হৃদয়টা মোচড়ায়ে করে আনচান।
বুক ফাটে তো  মুখ ফোটে না—
গলায় ঝুলাইছি  তাই লাভের লকেট।
এ কাজের মানে কিন্তু — খুব সিক্রেট!


পাশের বাড়ির জেরিনের বোন
আমার সাথে করে কেমন কেমন
উথাল-পাথাল করে আমারও মন
কেউ যেন  কিছু টের না পায় —
বুঝে যেন না ফেলে  কোনো ক্লাসমেট।
বিষয়টা বুঝলে তো — খুব সিক্রেট!


প্রথম বেঞ্চে বসে শশী
মন ভরে ওরে খুব ভালোবাসি
তাইতো আগে আগে স্কুলে আসি।
আসলেও কী আর হবে ভাই—
মোস্তফা খোলে না তো স্কুলের গেট।
বলা তো যায় না তবু  এই সিক্রেট!


শীলারেও  ভালো লাগে
দেখা হলো গতকাল  আম-বাগে
এমনতো ঘটেনি ভাই এর আগে
কথায় কথায় মারে এর্কি—
হাসতে হাসতে আমার ফেটে যায় পেট।
কেউ দেখে ফেললো কি? এই সিক্রেট!


শুনলাম স্কুলে সাব্বির ছ্যাড়া
সোনিয়ারে দেয় প্রেমের প্যাড়া
ছেলেটাও আছে সেরকম ত্যাড়া।
সোনিয়ার বান্ধবী কইছে—
সোনি লাভ করে না, করে শুধু হেট।
ছ্যাড়ারে বলো না এটা— খুব সিক্রেট!


দশটা বছর  পরে চাচা
এসে কী বুঝবে হাচা আর মিছা!
বললো–বেটা তোমার কপাল উঁচা
পিঠে থাপড়া দিয়ে কয়—
বাঘের বাচ্চা তুমি হেভি হেভি গ্রেট।
বেটা কিন্তু বোঝে নাই আসল সিক্রেট!


মা বোঝে না  বাপ বোঝে না
এরা আমার কোনো কাজে আসে না
আগের মতো আর ভালোবাসে না
বেশি কিছু বলি যদি—
সামনে থেকে নিয়ে যায় ভাতের পেলেট।
কারে আর বলি এসব — পঁচা সিক্রেট!


কত কিছুর স্বপ্ন দেখি
আবছা আলোয় তার ছবিটা আঁকি
অল্প স্বল্প কিছু গল্প লিখি
এগুলো বোঝে না স্যাররা—
বলে কী–পড়িশনি বেটা্ মূর্খ গবেট।
কীভাবে বোঝাবো এদের আমার সিক্রেট!


একশো মনীষীর জীবনী
লাইব্রেরি থেকে কিনে এনেছি
পড়ছি মাইকেল মধুসূদন যিনি
লিখেছিলেন মহাকাব্য —
আমিও চেষ্টা করছি লিখতে সনেট।
লিখবো, কিন্তু  শুনাবো না— আছে সিক্রেট!


কত কিছুর আছে দরকার
ব্যাপারটা মা বাবার খরচ-খরচার
কিছু কি বোঝে না বেটা সরকার?
কিনতে চাই আমি সবকিছু—
হাত দিয়ে দেখি ফাঁকা আমার পকেট
এ বিষয়ে থাকলো না কোনো সিক্রেট।


আবোল তাবোল এসব যা-ই বললাম—
    যত সিক্রেট ফাস করেই দিলাম
এর পরেে মেরে দিলাম থার্ড ব্যাকেট।
টেনে উঠে আরো কিছু বলবো সিক্রেট।


১৭/০৩/২০২৪
ভুলতা,রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।