মাটির চুলোর উপর মা বড় মমতায় ভাত রেঁধেছিল
গরম সিদ্ধ ভাত আর পোড়া মরিচের সাথে নুন,
বড়ই যে মজা লাগে তাঁর।
উঠান পাড়ে ছোট্ট ভাইটা কুতকুত খেলার ঘর এঁকেছিল
খবরার উপর খবরা ফেলে খেলবে বলে।
লাল আলতা, টীপ আর চুলের ফিতা গত রাতেই কেনা হয়েছিল
সাজবে এসে, যাবে শ্বশুর বাড়ি।
আসবে ফেলানি।


এমনই এক রঙিন আকাশের দিনে
বিকট আওয়াজ তোলা বুলেটের আঘাতে
নিমেষেই সেই রঙিন আকাশটা ধূসর হতে লাগলো।
কান ঝাঁঝাঁনো শব্দ তোলা বুলেটটা
কখন যে পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের বুকটাতে ঢুকে
ফুসফুসটাকে থেতলে দিয়ে ঝাঁঝালো গন্ধে
ওপাশ থেকে বের হয়ে গেল।
নিথর দেহখানি লটকে গেল সম্রাজ্যবাদের তারকাঁটায়
হেলে পড়ল আমার বাংলাদেশ.........আমাদের বাংলাদেশ।
ফেলানি নাম যার.........আমাদের ফেলানি।


সেদিন ঘোরলাগা রোদের আকাশে শকুনের চিৎকারও থমকে গেল
সম্রাজ্যবাদের বিষবাষ্পে নিমেষেই হারিয়ে গেল মাংসখেঁকো শকুন।
যে রক্তের দামে এদেশ কিনেছি, ঝরছে আজ সে রক্ত;
নিরন্তর.........একফোঁটা......দুইফোঁটা।
জমাট রক্তের উপর পড়ছে মাছি.........মুখ দিয়ে পড়ছে লালা
অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে, তাতে শুধুই মৃত্যুর জ্বালা।
চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত;
না...না... এ রক্ত নয়; এ যে শুধুই দুঃখ।
লটকে আছে দেখ আমার দেশটা.........আমাদের দেশটা।


কন্সট্যাবল আমিয়া ঘোষ
এই দেখ সেই রক্তে ভেজা বুলেট।
এর একবিন্দুও কি তোর চোদ্দপুরুষের
যে ইচ্ছে হলেই ঝরিয়ে দিলি।
সম্রাজ্যবাদের  ঢেঁকুর তোলা সব তামশার জোঁকার
করলো প্রহসনের বিচার, যে বিচারে সবই ধোঁকার।
বিচার পেলনা ফেলানি
বিচার পেলনা বাংলাদেশ............আমাদের বাংলাদেশ।


বিশ্ব সংসার লন্ড ভন্ড করে আমি বলছি
বিচার চাই.........বিচার চাই।
বিচার কর বিশ্ব
লটকে আছে দেখ আমার বাংলাদেশ.........আমাদের বাংলাদেশ
সম্রাজ্যবাদের তারকাঁটায়
আমরা  বিচার চাই
আমরা  বিচার চাই।