আমি যদি মরিয়া যেতে পারিতাম
এই শীতে,
যেমন বৃক্ষ পরিত্যাগ করে তাহার শেষ পত্র,
যেমন সর্প নিশ্চল হইয়া থাকে
সমগ্র শীতকাল ব্যাপিয়া।
শীতের অন্তে নবজীবনে জাগিয়া উঠে বৃক্ষ,
শিকড়ের গভীর হতে প্রবাহিত হয় প্রাণরস,
শাখায় শাখায় বিকশিত হয় সতেজ পল্লব,
আর প্রস্ফুটিত হয় অগণন রঙিন কুসুম।
সর্পও ত্যাগ করে তাহার জীর্ণ খোলস,
নবচর্ম দীপ্তিময় হয় চন্দ্রালোকের ন্যায়,
তাহার দ্বিখণ্ডিত জিহ্বা
জ্বলে ওঠে দাহ্য শিখার ন্যায়—
যে শিখা ভয়ের অভিধান জানে না।
কারণ তাহারা জানে কিরূপে
শীতের দীর্ঘ রাত্রি পার করিয়া
নবজন্ম গ্রহণ করিতে হয়।
আমি যদি পারিতাম সেইরূপে বিলীন হইতে—
যদি নিমগ্ন হইতে পারিতাম একান্ত শূন্যতায়,
যেখানে স্মৃতি নাই, যন্ত্রণা নাই, আকুলতা নাই,
তবে প্রতিদিন অল্প অল্প করিয়া
মরিতে হইত না আমায়—
এই বাঁচিয়া থাকার ক্লান্তি লইয়া,
এই হাসির অন্তরালে চাপা আর্তনাদ লইয়া,
এই সুখের ভান, ভালোবাসার প্রয়াস,
সর্বস্ব বিলাইবার অবিরাম চেষ্টায়।