বন্ধুরে আজ আমি ক্লান্ত।
হাটতে হাটতে স্বর্গ চেড়েছি।
চুটে গেছি নরকের কাছে।
দূর থেকে শুনেছি নরকের সুখ।
সেই সুখ না দেখেই, স্বর্গের তিক্ততা ছাড়ার পণ।
শত-হাজার মাইল পাড়ি দেয়া শেষ,
আজ আমি নরকের দাড়প্রান্তে।
কিন্তু কই কৃত্তিম সুখের চেহারা এত কুৎসিত কেন?
তার পরশ আগ্নেয়গিরির মত জলসানো।
পুড়িয়ে পুড়িয়ে ছাই বানাচ্ছে প্রত্যেকটি নফরকে।
আরেকটা কথা,
এখানে সবাই প্রিয়জনের ছদ্মবেশে থাকে,
অথচ মায়ামাখা সেই হাসিটাই দিতে অপারগ।
আজ এই বিভৎস পরিহাস দেখে
নোনা বন্যায় স্মরণ করছি, স্বর্গের সেই তিক্ততার প্রহর গুলোকে।
আর ভাবছি, সেই তিক্ততাই তো ছিল সত্যিকারের মায়া, মমতা, হাসি, আনন্দ, স্বাধীনতা আর কিছু প্রিয়মুখ
দেখার শান্তি।
চাইলেই পারা যেত যেন সবকিছু।
দিনশেষে বুক পকেটে কিছু থাকুক আর না থাকুক,
অন্তত মন পকেটে থাকতো একমুঠো সুখ বহি আরো কত প্রিয়মুখের প্রতিধ্বনি।
আর এখানে বুক পকেটে থাকে চলার মত সব।
অথচ, মনের হাত-পা শিকর দিয়ে বাধা।
আর মন পকেটে থাকে নোনা জলে বাধ ভাঙ্গার আর্তনাদ।
তাইতো মাঝে মাঝে, ভেসে যেতে মন চায় বাধ ভাঙ্গা নোনা জলে।
আবার মাঝে মাঝে ক্ষণস্থায়ী জ্বলে উঠে, সাঁতরে পাড়ে ফেরার বৃথা চেষ্টা।
তবে এই দিন বদলাতেও বেশি সময়  না লাগারি কথা।
প্রিয়জনের দু হাত তোলা প্রার্থনায় আর খোদার কৃপায়, স্বর্গের তিক্ততায়ীদের ইচ্ছে পূরণের দিন আসবে।
তারা ভাসবে সুখে, আর আমি থাকবো তখন নরকের জলসানো লাভা থেকে অনেক অনেক দূরে।
সেটা হয়তো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তাই আর আমার জন্য ভাবিস না।
মন খারাপ করে জাগিস না আর একটি রজনীও।
দিন বদলের অপেক্ষায়, সে প্রার্থনারত প্রিয়জনদের দলে চলে আয়।
দেখবি সব ব্যথা ধুয়ে মুছে গেছে।


ইতি
নরকবাসী
(প্রবাসীর খোলা চিঠি)